এবারই বিশ্বকাপ দুভার্গ্য ঘুচবে সাঙ্গার?
ঢাকা: এই বিশ্বকাপ চলাকালেই মুত্তিয়া মুরালিধরন সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছিলেন।
মুরালি জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে কুমার সাঙ্গাকারাই বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। আপনারা সবাই বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স কিংবা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের কথা বলতে পারেন। কিন্তু সাঙ্গাকারা এমন একজন ব্যাটসম্যান যাকে প্রতিটি প্রতিপক্ষের ভয় পেতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি যে কোনো ভুল কথা বলেননি তা প্রমাণ করে চলেছেন মাতালের ব্যাটিং প্রতিভা। ক্রিকেটযজ্ঞে সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরির মালা গেঁথে।
৫০ ওভারি ক্রিকেটে বিশ্বকাপ কুফা কাটাতে মরিয়া সাঙ্গাকারা প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করেই চলেছেন। বুধবার বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে টানা চার সেঞ্চুরি হাঁকানোর কৃতিত্ব দেখান ৩৭ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে অপরাজিত ১০৪ রান দিয়ে সেঞ্চুরির মালা গাঁথা শুরু করেছিলেন, এরপর ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্কটিশদের বিপক্ষে ১২৪ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন সাবেক লঙ্কা অধিনায়ক। যা সাঙ্গাকারাকে জহির আব্বাস, সাঈদ আনোয়ার, হার্শেল গিবস, এবি ডি ভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি কক ও রস টেলরকে ছাপিয়ে ভিন্ন উচ্চতায় উঠিয়ে দিয়েছে। কেননা এই ছয় ব্যাটসম্যানই ওয়ানডেতে টানা তিনটি করে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন। তাছাড়া স্কটিশদের বিপক্ষে বীরত্বের পর প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে চারটি সেঞ্চুরিরও নতুন কীর্তি দেখালেন সাঙ্গাকারা। কিন্তু মজার বিষয় হলো এর আগের দুই আসরে একটি সেঞ্চুরিও করতে পারেননি তিনি।
গেল দশকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ফ্রন্টলাইনে আছেন সাঙ্গাকারা। যিনি রঙিন পোশাকের সাথে সাথে টেস্ট ফরম্যাটেও দশ হাজারের বেশি রান করার গৌরব অর্জন করেন। শচীন টেন্ডুলকারের পর ওয়ানেডতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ হাজারের বেশি রান তারা। আর টেস্টে সর্বসাকুল্যে পঞ্চম স্থানে। অবশ্য সাঙ্গা যে অনেক দূর যাওয়ার জন্য ক্রিকেটে পা রেখেছেন তা অভিষেকের অব্যবহিত পরেই প্রমাণ করেছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৫০ রানের ঝাঝালো ইনিংস খেলে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ম্যান অব ম্যাচ হয়েছিলেন।
এরপর আর কখনোই পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সাঙ্গাকারাকে। প্রিয় বন্ধু কুমার সাঙ্গাকারাকে নিয়ে অনেক রেকর্ড নতুন করে লিখেছেন স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান। সেজন্য দীর্ঘ এই পরিক্রমায় তার নামের পাশে জমা হয়েছে ৬৩টি সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে এসে আরো যেন তাতিয়ে উঠেছেন তিনি। যেন একটা মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন! কারণ ২০০৭ সালের পর ২০১১ টানা দুবার ক্রিকেটযজ্ঞের শেষ ধাপে গিয়ে ধরা খেয়েছেন।
এবার সেজন্য বিস্ফোরণ হয়েই যেন আবির্ভূত হতে চাইছেন সাঙ্গাকারা। সব হিসাব বদলে ফেলার প্রত্যয় তার চোখেমুখে। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে যেমন অগ্র সেনানীর ভূমিকা পালন করেছিলেন, আরেকটি মহাবিস্ফোরণে তারই পুনঃমঞ্চায়ন করতে চাইছেন। সোনালী ট্রফির জহরত নিয়ে নিজের ওয়ানডে বিদায়কে রুপকথায় মোড়াতে চাইছেন। প্রসঙ্গত, ইতোমধ্যেই টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন সাঙ্গা, ওয়ানডে থেকেও বিদায় নিচ্ছেন। এরপর টেস্ট থেকেও শিগগির অবসরে যাবেন লঙ্কান ক্রিকেটের বরপুত্র।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফকে
নিউজবাংলাদেশ.কম