কার্যালয় ফাঁকা, দেশের দর্শকদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই বিসিবির
ঢাকা: বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে ১৯ মার্চ ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে দেশের ক্রিকেটভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠার শেষ নেই। কিন্তু সে উত্তেজনার ছিটেফোঁটাও স্পর্শ করতে পারেনি বিসিবির কর্তাদের মন কিংবা মগজ। আর তাই ওইদিন দেশের দর্শকদের জন্য নেই কোনো বিশেষ আয়োজন। নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
জানা গেছে, বিসিবির বেশিরভাগ কর্মকর্তাই অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেছেন, বাকিরাও দল বেঁধে যাবেন মঙ্গলবার।
এ অবস্থায় কোনো স্টেডিয়াম কিংবা অন্য কোথাও বড় পর্দায় খেলা দেখার কোনো আয়োজন করারও কেউ থাকছে না। কারণ নিজেদের বিদেশ সফরের স্বার্থে এ ধরনের কোনো পরিকল্পনাই গ্রহণ করেনি বিসিবি।
বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি সাধারণ দর্শকদের জন্য বড় পর্দায় দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকতা নিজাম উদ্দিন চৌধরী সুজন বলেন, “মিরপুরে শেরে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেরি জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনো পরিকল্পনা নেয়া হয়নি।’
বিসিবির অফিশিয়াল ম্যানেজার বাতেন বলেন, “সত্যি বলতে বিসিবির প্রায় সবাই কাল (মঙ্গলবার) অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকতা নিউজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনসহ প্রায় সব কর্মকতাই অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন। মিরপুর স্টেডিয়াম ফাঁকাই থাকবে।”
হোম অব ক্রিকেট গ্রাউন্ড মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির কার্যালয়। যেখানে সারা বছর কোলাহলপূর্ণ থাকে বিসিবির কর্মকর্তা, কর্মচারী, ক্রিকেটার, কোচ, ক্লাব কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের পদচারণায়। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকে বিসিবি কার্যালয় এখন ফাঁকা।
বিসিবির পরিচালকদের মধ্যে থেকে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেণ- সহসভাপতি মাহবুব উল আনাম, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয়, লজিস্টিক কমিটির চেয়ারম্যান আইএইচ মল্লিক, গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হানিফ ভূঁইয়া, মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান এমএ আউয়াল চৌধুরী বুলু, ফ্যাসিলিটিজ কমিটির চেয়ারম্যান তানজিল চৌধুরী, ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান শেখ সোহেল ও আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল করিম টিংকু।
এছাড়া বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন রয়েছেন বাংলাদেশের ম্যানেজার হিসেবে। বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামকেও অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাতে ভুল করেনি বিসিবি। বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে মিডিয়া ম্যানেজার সব দলেরই সঙ্গেই রয়েছেন। বিসিবির অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার রতন গোমেজও রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়।
বিসিবির পরিচালকরা ছাড়াও বিসিবির টিকিট অ্যান্ড সিটিং কমিটির সদস্যসচিব উমর ফারুক, টেন্ডার অ্যান্ড পারচেজ কমিটির সদস্যসচিব ডা. আকাশ, লজিস্টিক বিভাগের কর্মকর্তা কাওসার আজম সজীব ও আজিজুর রহমান, প্রশাসনিক বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার আল মামুন, টেন্ডার অ্যান্ড পারচেজ কমিটির ফেরদৌস, অ্যাকাউন্টস বিভাগের সাঈদও এখন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। এছাড়া বিসিবির অফিস স্টাফ কামরুলও গিয়েছেন বিশ্বকাপের খেলা উপভোগ করতে।
বিসিবির কোটি কোটি টাকা খরচ করে কর্মকতাদের অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে খেলা দেখা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠছে। অন্যদিকে বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে বিসিবির দুই পরিচালকের জুয়ার কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর দেশের ক্রীড়াঙ্গনে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে বিসিবি। তারপরও তারা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। এ বিষয়ে তারা ভাবলেশহীন।
বিশ্বকাপে লড়াই করেই স্বপ্নের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে মাশরাফি-সাকিবরা। আগামী ১৯ মার্চ মেলবোর্নে ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে মাঠে মুখোমুখে হবে টাইগাররা। ভারতকে হারাতে পারলেই প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসএস/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম