News Bangladesh

ক্রীড়া প্রতিবেদক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
আপডেট: ১৩:৪৫, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

‘টাই’ নির্বাচনে কে হচ্ছেন বাফুফে সদস্য

‘টাই’ নির্বাচনে কে হচ্ছেন বাফুফে সদস্য

বাফুফে ভবন। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন ১৪ জন। তবে আটকে গেছেন সাইফুর রহমান মনি এবং মো. এখলাসউদ্দিন। 

সেই নির্বাচনে দুজনেই পেয়েছেন সমান ৬১ ভোট। ‘টাই’ হওয়ায় আগামী ৩০ নভেম্বর সদস্য পদে মনি আর এখলাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে পুনঃনির্বাচন।  

জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সাইফুর রহমান মনি। বর্তমানে কোচিং পেশায় জড়িত। এখলাসউদ্দিন চুয়াডাঙ্গা ডিসট্রিক্ট ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফএ) সভাপতি। তরুণ সংগঠক স্কুল আর কলেজ জীবনে ক্রিকেট খেলেছেন। বর্তমানে ব্যবসায়ী। মাত্র ৪২ বছর বয়সেই চুয়াডাঙ্গা ফুটবলকে জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেকটা সফল তিনি। প্রায় এক দশক পর ২০২৩ সালে চুয়াডাঙ্গা লিগ আয়োজন করে প্রশংসিত হয়েছেন। এছাড়া নিজ জেলায় সারাবছর ফুটবল মাঠে রাখায় রাখছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা। 

৩০ নভেম্বর পুনঃনির্বাচনে বাফুফে’র ১৫তম সদস্য হিসেবে কে নির্বাচিত হবেন, সেটা সময়েই বলে দেবে। যদিও মনি এবং এখলাস দুজনেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। 

এখলাসউদ্দিন জানিয়েছেন, ২৬ অক্টোবর রাতে নির্বাচনের ফলাফল জানার পরেই আমি আবার নির্বাচন শুরু করেছি। আমি প্রতিদিন সম্মানিত ডেলিগেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমার বিশ্বাস তারা আমাকে বিমুখ করবে না।

সাবেক ফুটবলার মনি জানিয়েছেন, আমি ন্যাশনাল টিমের সাবেক ফুটবলার। আমার পরিচিতিটাও বেশি। যদিও আমি ইতোপূর্বে দুইবার নির্বাচনে অংশ নিয়েও জয় পাইনি। অন্যদিকে এখলাসউদ্দিন প্রথমবার নির্বাচনে এসেই টাই করেছে আমার সাথে। আসলে নির্বাচন ভিন্ন বিষয়। আমি তো আমার চেয়ে এখলাস ভাইকেও স্ট্রং প্রার্থী বলবো। তবে ডেলিগেটরা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো করে চেনে। তাই আমি পুনঃনির্বাচনে জয়ের আশা করতেই পারি। 
  
এখলাসউদ্দিন জানিয়েছেন, মনি ভাই সাবেক ফুটবলার। বর্তমানে কোচ। ঢাকায় ক্লাবের সাথে জড়িত। ঢাকার ক্লাবগুলোর সাথে তার যোগাযোগ নিবিড়। তবে আমি মনে করি, আমরা যারা জেলা বা তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবল নিয়ে কাজ করি, তারা সংগঠক হিসেবে অনেক বেশি পারদর্শী। শুধুমাত্র সুযোগের অভাবে তারা জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসতে পারেন না। নইলে তারাও দেশের ফুটবল উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। 

বাংলাদেশের ফুটবল বর্তমানে অনেকটাই ব্যাকফুটে। ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল জাগাতে তৃণমূল পর্যায়ে জোর দেয়ার কোন বিকল্প নেই। এখানেই প্রয়োজন এখলাসউদ্দিনের। সাবেক খেলোয়াড়দের অনেকভাবে কাজে লাগানো যায়। কোচ হিসেবেই তারা খেলোয়াড় তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। আবার ক্লাব ফুটবলের কোচ মনিদের জন্য ফুটবলার সরবরাহের কাজটা জেলা থেকেই হয়ে থাকে। জেলায় লিগ বা টুর্নামেন্ট না হলে ঢাকার ক্লাব কিংবা জাতীয় দলের বিভিন্ন পর্যায়ে খেলোয়াড় সংকট তৈরি হবে।

এখলাসউদ্দিন জানান, বাফুফে’র কার্যনির্বাহী কমিটিতে যতবেশি জেলা কিংবা তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠক সুযোগ পাবে, তত দেশের লাভ। আপনি ঢাকায় বসে দেশের আনাচেকানাচের ফুটবলের সঠিক অবস্থা জানতে পারবেন না। এছাড়া বাফুফে কমিটিতে স্থান পেলে আমরাও আমাদের সব সমস্যা ফুটবলের প্রধান কর্তাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারব। সেক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা হবে। যা জরুরী। আর কিছু না হোক, জেলা লিগ আর টুর্নামেন্ট নিয়মিত আয়োজনে ডিএফএ সংগঠকদের ভূমিকা জোরালো হবে। 

মনি জয়ী হলে ফুটবলার তৈরিতে একাডেমির উপর জোর দিতে চান। আর এখলাসউদ্দিন চান প্রান্তিক ফুটবলের উন্নয়ন। ফুটবলের সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ মনে করেন, বাফুফে কার্যনির্বাহী পরিষদে সাবেক খেলোয়াড় থাকা প্রয়োজন। তারা নিজেদের খেলোয়াড়ি জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশের ফুটবল উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, সাবেক খেলোয়াড়দের কাজ করার নানাবিধ সুযোগ রয়েছে। তারা কোচিং পেশায় জড়িত হন। বাফুফের বিভিন্ন ফুটবল কমিটির টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব পেতে পারেন। সেজন্য বাফুফে সদস্য হওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং দেশের বিভিন্ন জেলার কর্তারা বাফুফে পদে এলে তাদের দায়বদ্ধতা বাড়বে। তারা নিজের এলাকায় ফুটবল সচল রাখায় আর একাডেমিগুলো দেখভালের দায়িত্ব বাফুফে’র সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে করতে পারেন। 

এখলাসউদ্দিন আরও জানান, বাফুফে কর্তা বা প্রতিনিধি কখনও কোন জেলার ফুটবল কার্যক্রম দেখতে যান না। জেলা লিগ ভিজিটে যান না। যা করার জেলা প্রতিনিধিরা নিজ উদ্যোগে করেন। আমি তো চাই দেশের ৬৪ জেলায় নিয়মিত লিগ আয়োজন হোক। মূল্যায়ন করা হোক জেলা প্রতিনিধি আর ডেলিগেটদের।  

নির্বাচনে আগাম কোন ভবিষ্যৎবাণী চলে না। তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। দেখা যাক, বাফুফে’র কাউন্সিলর বা ভোটাররা ১৫তম সদস্য হিসেবে একজন সাবেক সাবেক খেলোয়াড় নাকি সংগঠককে বেছে নেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়