ধারাবাহিক ব্যর্থ লিটন-মোসাদ্দেকদের শিখতে বললেন মুশফিক
লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজ জয়ের আশা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন মুশফিকুর রহিম। দলের বিপদে সতীর্থরা ব্যর্থ। সেই হতাশার কথা শোনা গেল মুশফিকুর রহিমের কণ্ঠে। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের চাওয়া, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, আফিফ হোসেনের মতো ক্রিকেটাররা যেন ভুল থেকে দ্রুত শিখতে পারেন।
জাতীয় দলের এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের মতে, বড় ম্যাচে তো বটেই, সাধারণ সব ম্যাচেও সিনিয়রদের ওপর চাপ বেশি পড়ে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে দলকে বয়ে নিয়েছেন সিনিয়ররাই। প্রথম ম্যাচে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা মুশফিক, ফিফটি করেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় ম্যাচে মুশফিক করেন সেঞ্চুরি, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪১ আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে।
লিটন-মোসাদ্দেক-আফিফরা ব্যর্থ। টানা দুই ম্যাচ খেলে ব্যর্থ ওপেনার লিটন দাস। প্রথম ম্যাচে তিনি আউট হন শূন্য রানে। অনেক আলোচনা-বিতর্কের পর দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে করেন ২৫। সবশেষ ৮ ওয়ানডে ইনিংসে ২৫ তিনি ছাড়াতে পারেননি একবারও। প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই দৃষ্টিকটু শটে আউট হন মোহাম্মদ মিঠুন। তার জায়গায় দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে মোসাদ্দেক ১০ রানে আউট হন আরও বাজে শটে।
আফিফ হোসেন প্রথম ম্যাচে শেষ দিকে নেমে মোটামুটি কার্যকর ব্যাটিং করেন। দ্বিতীয় ম্যাচে তার সুযোগ ছিল লম্বা সময় উইকেটে কাটিয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার। কিন্তু তিনিও ফেরেন উইকেট বিলিয়ে দিয়ে। একাদশের বাইরে স্কোয়াডে ছিলেন সৌম্য সরকার। দেশের ক্রিকেটের দীর্ঘ বিনিয়োগের প্রতিদান এখনও সেভাবে দিতে পারেননি যিনি। সবশেষ ১৫ ওয়ানডে ইনিংসে তার ফিফটি কেবল একটি। সুযোগ কাজে না লাগিয়ে এই সিরিজে বাদ পড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
একই কারণে অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েস দলে জায়গা হারিয়েছেন। নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান, এনামুল হকরা ছিটকে পড়েছেন জাতীয় দল থেকে এখন অনেক দূরে। লঙ্কানদের বিপক্ষে দুই ম্যাচে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করার পর মুশফিক বলন, “একটা দলে যদি সাত-আটজন ধারাবাহিক পারফরমার থাকে, তাহলে যে কোনো দলের জন্যই প্লাস পয়েন্ট। যে কোনো পরিস্থিতি থেকে তখন দল বের হয়ে আসতে পারে। আজকে (মঙ্গলবার) তামিম ও সাকিবের মতো দুজন, যারা ওপরের দিকে সবসময় রান করে বাংলাদেশের জন্য, তারা ভালো করেনি। তাই লিটন, আফিফ ও মোসাদ্দেকের সুযোগ ছিল।”
মুশফিকের মতে, সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি অন্যরা নিয়মিত অবদান রাখতে পারলে নতুন উচ্চতায় উঠে যাবে বাংলাদেশ দল। তিনি বলেন, “তারা চেষ্টা করেছে। কিন্তু আরেকটু সিলেক্টিভ হলে (শট নির্বাচনে) ওরা আরও ভালো ফল পাবে। কারণ, এই সব উইকেটে কখন কম ঝুঁকির শট খেলবে, কখন বেশি ঝুঁকির, এগুলো একটু জানতে হবে। আশা করি, দিনে দিনে ওরা আরও পরিণত হওয়ার চেষ্টা করবে। আমি খুবই খুশি হব, যদি ওরা তাড়াতাড়ি শিক্ষা নিতে পারে এখান থেকে। নাহলে, সব বড় ম্যাচে বা সাধারণ ম্যাচেও সব চাপ আমাদের ওপর এসে যায়, তখন আসলে একটু কঠিন হয়।”
মুশফিকের আশা দ্রতই তারা ম্যাচে জয়ের অবদান রাখবে। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, খুব দ্রুত ওরা অবদান রাখতে শুরু করবে। আর ওরা অবদান রাখতে শুরু করলে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী দল হবে, বিশেষ করে ওয়ানডেতে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসএস/এফএ