টাইগারদের সামনে অপরাজিত ভারত
ঢাকা: জিম্বাবুয়ান ক্রিকেটার বলেই কিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনোই তেমন সমাদর পাননি তিনি! হয়তো ব্যাট হাতে প্রতিভার পুরো স্ফূরণও ঘটাতে পারেননি হারারের ২৯ বছর বয়সী ব্যাটিং প্রতিভা। কিন্তু তিনি কোন মাপের খেলোয়াড় বিদায়ী ম্যাচে তা আরেকবার প্রমাণ করলেন ব্রেন্ডন টেলর। কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পর তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে চলতি বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সৌরভ ছড়ালেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। যদিও দিনশেষে পরাজিত দলেই তার অবস্থান। হ্যামিল্টনে দুরন্ত ছন্দে থাকা ভারতের বিপক্ষে ভালো লড়াই দিয়েও ৬ উইকেটে হেরেছে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের আট বল বাকি থাকতে।
শনিবারসীয় অকল্যান্ডে প্রধান প্রশ্ন ছিল ভারত কি গ্রুপ পর্বে তাদের সব ম্যাচ জিতে অর্থাৎ, ছয়ে ছয় করে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতে পারবে? নাকি জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট থেকে রত্ম-বিদায়ের দিনে জয়ের মুখ দেখবে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সিকান্দার রাজারা। আর জয়ের সোল্লাসে প্রিয় সতীর্থ টেলরকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় জানাবে? এই দুই সমীকরণে মহারণ শুরু হলেও প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে। জয়ের ভালো সম্ভাবনা তৈরি করেও সুরেশ রায়না ও মহেন্দ্র ধোনির উজ্জিবীত ব্যাটিংয়ের নিকট মাথা নত করতে হয়েছে আফ্রিকার দেশটিকে। অবশ্য এর জন্য নিজেদের বাজে ফিল্ডিং ও ক্যাচ মিসকে দুষতে পারেন তারা।
ইডেন পার্কে জিম্বাবুয়ের বোলিং দেখে মনে হয়েছে, একটা ভালো উপন্যাসের শেষ পাতাটা নেই। তাদের শুরুটা ছিল যথেষ্ঠ প্রাণোদ্দিপীত। কিন্তু দিন যতো গড়িয়েছে, ততোটাই ফিকে হয়ে এসেছে ব্রেন্ডন টেলর বাহিনীর জয়ের সম্ভাবনা। তাই ৯২ রানের মধ্যে ভারতীয় টপ অর্ডারকে গুঁড়িয়ে দেয়ার পরও ছয় উইকেটের বিশাল ব্যবধানেই হারতে হয়েছে জিম্বাবুয়েকে। ২৮৮ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নামা ভারতকে ইনিংসের শুরুতেই চেপে ধরেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা। সপ্তম ওভারে চার বলের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেছেন ভারতের দুই ওপেনার। ৬.১ ওভারে রোহিত শর্মার বিদায়ের পর একই ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন শিখর ধাওয়ানও (৪)।
পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয় আজিঙ্কা রাহানে ১৯ রান করে রান আউট হলে। ১৬.৩ ওভারে দলীয় ৭১ রানে টেইলর স্টাম্প ভাঙেন তার। এরপর স্কোরবোর্ডে আরো ২১ রান যোগ করে আউট হন বিরাট কোহলিও (৩৮)। ফলে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে ভারত। কিন্তু ওই পর্যন্তই। পরিস্থিতি বদলে যায় দ্রুতই। মহেন্দ্র ধোনি ও সুরেশ রায়না সেই অবস্থা থেকেই দলকে টেনে তোলেন। পঞ্চম উইকেটে ১৯৬ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নোঙর করান। ধোনির ব্যাট থেকে এসেছে ৮৫*। আর রায়না তো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি (১১০) তুলে নেন। এজন্য ১০৪ বল খরচ করেন তিনি। চারটি ওভার বাউন্ডারির সাথে ৯টি চারও মেরেছেন উত্তর প্রদেশের ব্যাটসম্যান। জিম্বাবুয়ে পেসার তিনাশে পানিয়াঙ্গারা দুটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে জিম্বাবুয়ের ইনিংসটি ছিল ব্রেন্ডন টেলরের শিল্পীত ক্রিকেটের প্রতিচ্ছবিতে আন্দোলিত। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতীয় পেস ব্যাটারির সামনে প্রথমেই ভড়কে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ানরা। কিন্তু এরপরই দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন ব্রেন্ডন টেলর। দেশের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে ভারতের ক্ষুরধার বোলিংয়ের সামনে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ান তিনি। ১১০ বল মোকাবেলায় ৫ ছক্কা ও ১৫ চারে ১৩৮ রান করেন। ৫০ রান করেন শেন উইলিয়ামস। ভারতের তিন পেসার প্রত্যেকেই তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন। বাকি উইকেটটি যায় রবিচন্দন অশ্বিনের দখলে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফকে
নিউজবাংলাদেশ.কম