বাংলায় কথা বলে স্টোকস-বাটলারদের ক্ষেপিয়েছিলেন তামিম
নিরাপত্তা বিষয়ে নানা অজুহাতের পর ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরে রাজি হয়েছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। তিন ম্যাচের ওয়ানডেতে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল তারা, দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হয়েছিল ১-১ ব্যবধানে ড্র। দুই সিরিজেই ছিল দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
যা একটা সময় মাঠের খেলার বাইরেও পৌঁছায় বিবাদে। ওয়ানডে সিরিজ দ্বিতীয় ম্যাচে খেলা চলাকালীন জস বাটলার তেড়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ফিল্ডারদের সামনে আর ম্যাচ শেষে বেন স্টোকস তর্কে জড়ান তামিম ইকবালের সঙ্গে।
সে ম্যাচের এই ঘটনা তখন অনেক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। বিশেষ করে ইংল্যান্ড প্রথম জেতার পর বাংলাদেশ জিতেছিল দ্বিতীয়টি। ফলে সিরিজেও ছিল টানটান উত্তেজনা। এর মাঝে আবার দুই দলের খেলোয়াড়দের এমন যুদ্ধাংদেহী ভাব উত্তেজনার পারদটা আরও বাড়িয়ে দেয়।
সেদিন স্টোকসের সঙ্গে তামিমের বাদানুবাদের ছবি ভাইরাল হলেও, মূল কারিগর ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো। তিনি তামিমের হাত মুচড়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। সেখান থেকেই পরে স্টোকস এসে তর্কাতর্কি শুরু করেন।
তবে ঘটনার সুত্রপাত মাঠ থেকেই। প্রথম ম্যাচ জিতে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা ইচ্ছেমত স্লেজিং করেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। তা ফিরিয়ে দিতেই দ্বিতীয় ম্যাচে অভিনব এক পরিকল্পনা বের করেন তামিম। ইংলিশ ক্ষ্যাপাতে তিনি বাংলায় কথা বলা’কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন।
রোববার রাতে এক ইউটিউব লাইভ আড্ডায় সেই ম্যাচের ঘটনা বর্ণনা করেছেন তামিম, ‘সবাই আসলে শুনতে চায়, বেন স্টোকসের সঙ্গে আমার আসলে কী হয়েছিল। এখন বলি তখন কী হয়েছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সিরিজে প্রথম ওয়ানডেতে আমরা হেরে গেছিলাম। তখন তারা আমাদের জুনিয়র ক্রিকেটারদের অনেক কথা শুনিয়েছে। তাই দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আমি ঠিক করে ফেলেছিলাম, যাই হয়ে যাক, এটা আমি ফিরিয়ে দেবোই।’
‘তো আমি তখন করলাম যে, আমাদের সঙ্গে যে ইংলিশ কোচ ছিল, তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করলাম ওরা (ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা) আসলে কী কথা বললে অপছন্দ করে। জানলাম, যেকোন বিদেশির ক্ষেত্রেই, যদি ওদের সামনে বাংলায় কথা বলেন এবং ৫-৬ মিলেন হাসাহাসি করেন, তাহলে এটা ওদের খুব গায়ে লাগে। ওরা রাগ হয়ে যায়। ওরা চিন্তা করে, এই ইংরেজিতে কথা বলো না কেন? ওরা তো বুঝতে পারে না আমরা কী বলতেছি।’
‘ইংল্যান্ডের সঙ্গে ঐ ম্যাচে আমি তাই করছি। দলের পাঁচ-ছয়জনকে আমি বলছি, যাই বলি না কেন, তোরা শুধু হাসবি। তো যে ব্যাটসম্যানই আসে, আমি একটা করে কথা বলি আর আশপাশের পাঁচজন মিলে হাসি। তো এতেই আসলে ওদের মাথা খারাপ হয়ে গেছিল।’
‘আর একটা কথা হলো, বেন স্টোকসের সঙ্গে আসলে আমার কিছুই হয়নি। ঝামেলা করেছিল জনি বেয়ারস্টো, ম্যাচ শেষে আমরা যখন হাত মেলাচ্ছিলাম, তখন বেয়ারস্টো আমার হাতটা ধরে মুচড়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। আমি প্রটেস্ট করে বললাম, তুমি এটা কী করতেছ? তখন স্টোকস আসায় কিছু কথা কাটাকাটি হয়েছে। এছাড়া কিন্তু স্টোকসের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে কোন ঝামেলা হয়নি।’
‘এটাই ছিল ঘটনা। আমি এভাবেই স্লেজিং করতে পছন্দ করি। যেখানে ওরা বুঝবে না যে কী বলতেছি, কিন্তু বুঝতেছে যে ওদেরই বলতেছি। এটাতে ওরা খুবই পাজলড হয়ে যায়। এটা আমি অনেকবারই করেছি বিদেশি দলগুলোর সঙ্গে, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। তবে সত্যি কথা হলো, আমি এখন আর এসব বেশি করি না। যতক্ষণ না ওদের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়।’
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসএস/এএস