News Bangladesh

ধর্ম ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
আপডেট: ১১:১৮, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

অন্যের হক নষ্টকারীদের শস্তি অবধারিত

অন্যের হক নষ্টকারীদের শস্তি অবধারিত

প্রতীকী ছবি

আল্লাহর হক ও বান্দার হক বোঝাতে ‘হাক্কুল্লাহ’ ও ‘হাক্কুল ইবাদ’—দুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়। হাক্কুল্লাহ অর্থ আল্লাহর হক বা অধিকার। আরবি হাক্ক শব্দটিকে বাংলায় হক বলা হয়। হক শব্দটির অর্থ কয়েক রকম হতে পারে। তার মধ্যে এক অর্থ হলো অধিকার, হক, দাবি, পাওনা।

হাক্কুল্লাহ অর্থ আল্লাহর হক, আল্লাহর পাওনা। আর (ইবাদ) শব্দটি (আব্দ) শব্দের বহুবচন। যার অর্থ দাস, বান্দা। এখানে হাক্কুল ইবাদ অর্থ বান্দার হক, বান্দার অধিকার, বান্দার পাওনা। সহজভাবে- হাক্কুল্লাহ হলো- বান্দার কাছে আল্লাহর অধিকার বা পাওনা। এবং  হাক্কুল ইবাদ হলো- এক বান্দা বা একজন মানুষের কাছে অন্য এক বান্দা বা মানুষের অধিকার বা পাওনা।

অন্যের ক্ষতিসাধন, অধিকার হরণ বা হক নষ্টের চেষ্টাকারীদের আল্লাহ সাময়িকভাবে ছাড় দিলেও, ছেড়ে দেন না। তাদের জন্য শাস্তি অবধারিত। 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না। (সূরা আল-বাকারা, আয়াত-১৮৮)।

কুরআনে আরও বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা আমানতকে তার মালিকের কাছে প্রত্যর্পণ কর বা ফেরত দাও। (সূরা আন-নিসা, আয়াত-৫৮)। 

অন্যের হক নষ্টকারীদের সম্পর্কে হজরত আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কারও ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহতায়ালা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহতায়ালা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)। 

আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে, নবি (সা.) বলেছেন, ‘কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারও বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)।

হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আরও বলেছেন, যার কাছে তার ভাইয়ের হক রয়েছে, তা মান-সম্মানের হোক বা অন্য কিছুর হোক, সে যেন আজই ক্ষমা চেয়ে নেয় বা (পরিশোধ করে মিটমাট করে নেয়)। এমন দিন আসার আগেই, যেদিন কোনো অর্থকড়ি থাকবে না। যদি ব্যক্তির কোনো নেক আমল থাকে তা দিয়ে পাওনাদারের ঋণ বা হক শোধ করা হবে। আর যদি কোনো নেক আমল না থাকে তা হলে পাওনাদারের বা হকদারের পাপের বোঝা সমপরিমাণ তার মাথায় দিয়ে দেওয়া হবে।’ সহিহ বুখারি। এ হাদিস দ্বারা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত, দুনিয়াতে মানুষে মানুষে শুধু নয় কুল মাখলুকাতের মাঝে বিদ্যমান সব অন্যায় বৈষম্য ও বে-ইনসাফির সমতা বিধান ও সমাধান আখেরাতের আদালতে হবে। কেউ কারও হক নষ্ট করে দুনিয়াতে পার পেয়ে গেলেও আখেরাতে তাকে অবশ্যই পাকড়াও করা হবে এবং সে হক আদায় করা হবে। 

রাসুলের বেশকিছু হাদিস প্রমাণ করে অন্যের হক নষ্টকারীদের আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। কোরান ও হাদিসের আলোকে অন্যের হক আদায়ের ব্যাপারে সবার সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। অন্যের হক নষ্টকারীর শাস্তিও অবধারিত বলে প্রতীয়মান হয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়