ক্রিকেট কাহন
মোল্লা হক
ছোটবেলা থেকেই আমি প্রচুর খেলাধুলা করতাম। স্থানীয় ফুটবল, ক্রিকেট, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, ইত্যাদি। জুনিয়র ব্যাডমিন্টনে মতলব থানা চ্যাম্পিয়ান ও চাঁদপুর জেলায় রানার্স আপ হয়েছিলাম। ফুটবলে অর্জন একবার "হায়ার" (খাঁটি বাংলায় "খ্যাপ") হয়ে চাঁদপুরে খেলতে গিয়েছিলাম। স্কুল ক্রিকেটে তেমন অর্জন না থাকলেও বন্ধুদের নিয়ে "আটলান্টা ৯৪" নামে একটা টিম গঠন করেছিলাম (নামটা আমিই দিয়েছিলাম) ও মোটামুটি ভালো বোলিং করতাম।
ঢাকায় সরকারি বিজ্ঞান কলেজে পড়াকালীন কিছুদিন ফুটবল ও ক্রিকেট খেললেও পড়াশোনার কারনে তেমন খেলা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আইএসআরটি’র টিমে বাছাইয়ের সময় ভালো ব্যাটিং করে জায়গা করে নিয়েছিলাম। যদিও পরে আর খেলা হয়ে উঠেনি। ফজলুল হক হলের এক্স্টেনশনের নীচতলার টিমে জায়গা হয়েছিল বোলার হিসেবে। কিন্তু তানভীর ভাইয়ের বলে ছক্কা আর চার মারার বদৌলতে হয়ে যাই ব্যাটসম্যান (উইকেট কিপার নয়ন ভাই, বর্তমানে কক্সবাজারের এডিসি) হাতে ধরা খেয়ে আউট না হলে আরও দু-একটা চার ছক্কা মারার ইচ্ছা ছিল! এরপর তাবলিগের কাজে এতো ব্যস্ত হয়ে যাই যে আর খেলা হয়ে উঠেনি।
অস্ট্রেলিয়া এসে আবার সুযোগ হয়- মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিস’র হয়ে লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে (২০০৫-০৬) দুই বছর একটা করে ম্যাচ খেলি (ছবিতে দেখা যাচ্ছে)। দুটো উইকেট আর ৭-৮ রান ছাড়া তেমন কিছু করার ছিল না (শেষের দিকের ব্যাটসম্যান), আমার চেয়ে অনেক ভালো ভালো বোলার আর ব্যাটসম্যান ছিল টিমে। এরপর আর খেলা হয়ে উঠেনি। এমনকি খেলাধুলা খুব একটা ফলো পর্যন্ত করা হয়ে উঠে না।
কিন্তু দেশ বিশ্বকাপ খেলবে আর আমি সরব হবো না, তা কি করে হয়। ১৬০ ডলার দিয়ে সাবস্ক্রিপশন কিনে রাতে আমার ছোট দুই মেয়ে নিয়ে খেলা দেখা শুরু করেছি। আমার স্ত্রী এসেছেন একটা চিঠি ড্রাফট করতে। মনোযোগ মোটেই নেই -প্রথম বাক্য লেখার পর আমার স্ত্রী যা বোঝার বুঝে গেলেন - বললেন আজকে আমাকে দিয়ে অন্য কোন কাজ হবে না। রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জেগে খেলা দেখে তবেই বিছানায় গিয়েছি (সকালে আবার ঠিকই কর্মস্থলে আসতে হয়েছে)। যাই হোক, খেলা দেখে মজা পেয়েছি, সাপোর্ট করেও মজা পেয়েছি। গতকালকের বাংলাদেশের জিত আমার কাছে বিশ্বকাপ বিজয়ের মতোই মনে হয়েছে।
লেখক: মোল্লা হক, লেকচারার, মোনাশ ইউনিভার্সিটি মেলবোর্ন অস্ট্রেলিয়া।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএস