নিরাপদ প্রবাস জীবনের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা
দক্ষিণ আফ্রিকা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। যার সরকারি নাম ‘রিপাবলিক অফ সাউথ আফ্রিকা’ আফ্রিকার দক্ষিণে দেশটি অবস্থিত। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ৯টি প্রদেশে দেশটি বিভক্ত। রাজধানী প্রিটোরিয়া। কার্যকরী দেশটির বিচারালয় সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয় ব্লুমফার্টিং। আর আইন প্রণয়ন সম্বন্ধীয় কার্যালয়টি হল দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে সুন্দরতম শহর কেপটাউন। ৯টি প্রদেশে এর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম শহর জোহানেসবার্গ। রাষ্ট্রীয় ভাষা সমূহর দিক থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রায় ১১টি ভাষা রয়েছে। জাতিগোষ্ঠীগত দিক থেকে জোহানেসবার্গ জুলু ভাষার প্রচলন বেশি। এক একটি প্রদেশে তারা ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ব্যবহার করে থাকেন। ভাষাগুলো হল-যেমন ১। আফ্রিকানস ২। ইংরেজি ৩। ডেভেলো ৪। দক্ষিণ সয়েটু ৫। উত্তর সয়েটু ৬। সোয়াজি ৭। সাঙ্গাইন ৮। সোহানা ৯। ভেন্ডা ১০। কৌসা এবং জুলু।
জাতিগত বর্ণভেদ দিক থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুটি জাতির প্রচলন বেশিরভাগ দেখা যায় একটি কৃষ্ণাঙ্গ অপরটির হচ্ছে শ্বেতাঙ্গ। হারের দিক থেকে অনুসন্ধান করে দেখা যায় শতকরা ৮০ শতাংশ লোক কালো । ৯ শতাংশ সাদা, ৮ শতাংশ মিক্স, আর এশিয়ান ৩ শতাংশ।
দেশের প্রচলিত মুদ্রার নাম হচ্ছে এর রেন্ড (Rand) zar।
দক্ষিণ আফ্রিকার ভৌগলিক দিক থেকে কোন অংশে কম না, দেশটি আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। যার তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার। উপকূল এলাকায় অবস্থিত আছে বিশাল সমভূমি আয়তনের দিক থেকে উপকূলীয় সমভূমিটি একটি উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে মালভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। দেশটির জলাবায়ু এবং অর্ধ ঊষর।
মহাদেশটির নাম হচ্ছে আফ্রিকা। অঞ্চল হল দক্ষিণ আফ্রিকা। স্থানাঙ্ক দক্ষিণে ২৯°০০ আর পূর্বে ২৪ ডিগ্রি। যার উপকূলে দীর্ঘ ২৭৯৮ কিলোমিটার ১৭৩৯ মাইল। আয়তন হলো ১২,২১০৩৭ কিলোমিটার আর ৪৭১৪৪৫ মাইল। জনসংখ্যা হচ্ছে প্রায় ৪ কোটি ৯৮ লাখ।
সীমানার দিক থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মোট বর্ডার এরিয়া ৪৮৬২ কিলোমিটার তার মধ্যে বতসোয়ানা ১৮৪০ কিলোমিটার, লেসুটু ৯০৯ কিলোমিটার , মোজাম্বিক ৪৯১ কিলোমিটার, নামিভিয়া ৯৬৭ কিলোমিটার, সোয়াজিল্যান্ড ৪৩০ কিলোমিটার জিম্বাবুয়ে ২২৫ কিলোমিটার।
দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম হ্রদ, lake chrissil আর দীর্ঘতম নদী অরেন্স রিভার যার আয়তন ২২০০ কিলোমিটার।
দক্ষিণ আফ্রিকার মোট ৯টি প্রদেশে এর মধ্যে একটি হচ্ছে জোহানেসবার্গ (ঘাউটেং) প্রভিন্স। জোহানেসবার্গের সবচাইতে বড় লোকেশন হচ্ছে সাউথ ওয়েষ্ট টাউনশিপ যার নাম সংক্ষেপ ‘সয়েটো’ অন্যতম। দীর্ঘদিন থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রবাসী গান বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৮৬৩ সালে সয়েটো জোহানেসবার্গ মিউনিসিপালিটির আওতায় আসে। জনসংখ্যার দিক থেকে সাউথ আফ্রিকায় সয়েটো সবচাইতে জনবহুল এলাকা। প্রায় ২০০ কিলোমিটার আয়তনের এই এলাকাটিতে দেড় মিলিয়নের ও অধিক লোকের বসবাস।
এই সয়েটোতেই বাংলাদেশিসহ বিদেশির সংখ্যা অনন্ত ৩০ হাজার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য অন্যতম একটি স্থান। দীর্ঘদিন থেকে বিদেশি নাগরিকরা সয়েটোতে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে। সেখানে অনুসন্ধান করে দেখা যায় যে, বেশিরভাগই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে প্রবাসীরা। স্থানীয়ভাবে কৃষ্ণাঙ্গ বা শ্বেতাঙ্গসহ সাধারণত ছোট খাট কোন ব্যবসা-বাণিজ্য করতে তাদের দেখা যায় না। তাই সেখানে সকল প্রকার ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে প্রবাসীরা। অন্যান্য বিদেশির পাশাপাশি এই এলাকায় বাংলাদেশিদের দোকান রয়েছে অন্তত ৬/৭ হাজার।
জোহানেসবার্গের সবচাইতে অপরাধপ্রবণ এলাকার মধ্যে সয়েটো অন্যতম। চুরি, ডাকাতি, খুন, বিদেশিদের দোকানে হামলা ও লুটপাটসহ এমন কোন ঘটনা নেই যা সংঘটিত হয় না এই সয়োটেতে। বিশেষ করে প্রতি বছরেই কোন না কোন অজুহাতে এলাকাবাসী বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে মিউনিসিপালিটির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে। এই সময় মিছিল মিটিং থেকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে বিদেশিদের দোকানপাট।
এছাড়া অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত দশ বছরে শুধুমাত্র সয়েটোতেই খুন হয়েছে বাংলাদেশি, ইতুপিয়া সোমালিয়ান নাইজেরিয়ান পাকিস্তানি নাগরিকসহ অন্তত প্রায় ৩৫০ জন।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে ও সেপ্টেম্বর ২০১৮ স্থানীয়দের এক শিশু ইতোপিয়ান প্রবাসী ব্যবসায়ী দোকান থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খেয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল উত্তেজনা ও ভাঙচুরের সূত্রপাত। এমনকি অনুসন্ধান করে দেখা যায় যে, প্রবাসী ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ দোকানেই মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। স্থানীয়রা এই বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। যার সূত্র ধরে স্থানীয় সকল কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ একত্রিত হয়ে পূর্বের নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী, বিদেশি ব্যবসায়ীদের সোয়েটোতে থাকতে দেয়া হবে কিনা এবং হোম আফেয়ার্সকে বিদেশি ব্যবসায়ীদের কাগজপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে মেমোরেন্ডাম দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করেছেন সোয়েটোর স্থানীয় কমিউনিটি নেতা, দোকান মালিক এবং স্থানীয় কৃষ্ণাঙ্গরা।
বিদেশিদের থাকা না থাকা নিয়ে সবার মতামত চাওয়া হলে প্রায় ৭০ ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ থাকার পক্ষে রায় দেয় বলে জানা গেছে। এসময় হোম আফেয়ার্সকে বিদেশিদের কাগজপত্র যাচাই বাচাই করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখতে একটি মেমোরেন্ডাম দেয়া হয়েছিল।
বিদেশি নাগরিকের দোকানে মেয়াদ উওীর্ণ ও ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করে এক শিশুসহ ও এক সোমালিয়ান নাগরিকের গুলিতে একজন স্কুল ছাত্র নিহত হওয়ার অভিযোগে পুরো সয়েটোতে বিদেশি নাগরিকদের দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছিল প্রায় এক হাজারেরও অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
হামলা ও লুটপাটের শিকার বাংলাদেশিসহ কোন বিদেশি নাগরিক এই পর্যন্ত ফিরে যেতে পারেনি তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এবং আর ফিরে যেতে পারবে কিনা এই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহও তৈরি হয়েছিল।
স্থানীয়ভাবে খবর নিয়ে জানা যায় যে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সয়েটোর বিভিন্ন এলাকায় বিদেশিদের দোকানে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। তাই সয়েটোতে বসবাসকারী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বিগত সময়ে চরম আতংকে দিনাতিপাত করেছিল। ইতোমধ্যে আস্তে আস্তে প্রবাসী ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রবাসী ব্যবসায়ীরা।
দীর্ঘদিন থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী একজন সাংবাদিক ও বিশিষ্ট বাংলাদেশি প্রবাসী ব্যবসায়ী আমাদের এই সংকট ও সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে কয়েকটি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের প্রতিনিয়ত যে সমস্যাগুলো পোহাতে হয় তা হলো, দোকান ডাকাতি, কিডন্যাপ, কৃষ্ণাঙ্গ বা অন্যদের হাতে খুন, হাইজ্যাক, পারমিট জটিলতা ইত্যাদি। কিছু সমস্যা এই দেশের সরকারি কানুনের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। যেমন-পারমিট বা এসাইলাম সংক্রান্ত জটিলতা। তবে এই ক্ষেত্রে অনেকেই বলে ফুস করে কাগজ বের করা যায় এবং ব্যাক ডেট দিয়েও নাকি পারমিট করতে পারে। আপনাদের বলি, এসব আসলে দালালদের মুখের মিষ্টি বাণী। যা দিয়ে তাদের রুটিরুজি চালায়। বাস্তবতা বলে অনেকেই এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। যার ফলে অনেকেই দেশে গিয়ে আর ফিরে আসতে পারেনি। এর মূল কারণ হচ্ছে দালল তাদের পাসপোর্টে চুক্তিভিত্তিক দুই বা তিন মাসের জন্য একটি স্টিকার লাগিয়ে দেই এতেই তাদের হাতে আমাদের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু একবারও যাচাই করি না আবার দেশ থেকে যথা সময়ে ফিরতে পারবো তো? জেনে রাখা ভালো, আমরা যে প্রক্রিয়ায় পারমিট করে থাকি সেটি আপাতত বন্ধ। এবার আসেন প্রতিনিয়ত যেসব সমস্যায় আমরা বিষিয়ে উঠেছি সেই দিকে নজর দেই। বর্তমান আতংকের নাম ‘কিডন্যাপ’ আর এই শব্দের সাথে এই দেশের কালো বা সাদা কেউ অতটা পরিচিত ছিল না। কিছু বেলুন দুর্ঘটনায় জন্ম নেয়া বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি এই জঘন্য ঘৃণিত কাজে লিপ্ত। তাই আমাদের চলাচল কথাবার্তায় শতর্ক থাকতে হবে। আর যদি কাউকে সন্দেহ হয়, তার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে। একা চলার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। কারো মিষ্টি কথায় তুষ্ট হয়ে পাশে এনে বসাবেন না। পৃথিবীর যত দেশে আমরা বাংলাদেশিরা বসবাস করছি হলপ করে বলতে পারি, অপ্রত্যাশিত এবং নির্মম খুন-হত্যার শিকার দক্ষিণ আফ্রিকাই বেশি। যা খুবই দুঃখের ও হতাশার। এই বিষয়ে আমাদের কয়েকটি দিক খেয়াল রাখতে হবে। এই দেশের কৃষ্ণাঙ্গদের আমরা অনেকে মানুষই মনে করি না। আমরা তো তাদের দেশে এসে তাদের সামনে ব্যবসা বাণিজ্য করে নিজ দেশের ভাগ্য উন্নয়ন করছি, তাইনা! একটু ভাবুন আমাদের দেশে এভাবে কাউকে এমন সুযোগ করে দিতাম কেউ? আমি এই হত্যাকাণ্ডগুলোর কয়েকটি কারণ দেখতে পাই। যেমন-গত কয়েকদিন আগে আমাদের দুই বাংলাদেশি ভাইকে নিউক্যাস্টেলে রাতের আঁধারে গলা কেটে জঘন্য কায়দায় হত্যা করেছে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা। এর মূল কারণ হলো পণ্যের দরদাম ও বাজে ভাষায় কথা কাটাকাটি। মনে রাখবের জিহ্বার আঘাত বর্শার আঘাতের চেয়েও ভয়ংকর। তাই আমরা এমন কোনো আচরণ দিবো না যাতে ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। অনেক সময় দশ পয়সা, বিশ পয়সা অথবা এক টাকার জন্যেও তাদের আমরা তাড়িয়ে দেই। আমাদের কি আরো মানবিক হওয়া যায় না? একটু চেষ্টা ও আন্তরিক হলেই সম্ভবর।”
তিনি আরো বলেন, “শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক বলেছিলেন ইংরেজরা হলো মৌমাছির জাত। ভালো আচরণ দিবেন ওরা মধু দিবে। কিন্তু খারাপ আচরণ দিলেই ওরা ফুল (বিষাক্ত কাঁটা) পোঁড়াবে। একটু নোংরা বিষয়ে আলোকপাত করছি, ধরুন আপার বোন বা বিবাহিত স্ত্রী অথবা আপনার বান্ধবী নিয়ে যদি উড়ে এসে জুড়ে বসে কেউ লালসার স্বীকার বানাতে চায়, আপনি কি করবেন? দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের অসংখ্য বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে কোনো আফ্রিকান মেয়ের ছেলে বন্ধু বা স্বামীর আক্রমণে। চরিত্র বদলাতে ধর্মের দোহাই লাগে না, মনুষ্যত্বই যথেষ্ট। অনেকের দোকানে মালাও বা ভিন্ন দেশের কর্মচারী আছে। এটি দোষের কিছু না। বরং কম বেতনে পরিশ্রম আদায় করে নেয় আমরা। তবে সতর্ক থাকতে হবে যেনো তারা আপনার দূর্বল দিকগুলো না বুঝতে পারে। টাকা লেনদেন ও রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই শতর্কতা অবলম্বন জরুরি। দয়া করে রাতে সাথে নিয়ে ঘুমাবেন না। ঘুমন্ত মানুষ আর মরা লাশের মধ্যে তেমন ব্যবধান নেই। যেই ভাইয়েরা প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করছেন, আপনারা অবশ্যই দোকানের সেপ্টি এলার্ম এবং সিকিউরিটি নিশ্চিত করবেন।”
তিনি জানান, সবার সুন্দর ও গোছানো জীবনযাপন এনে দিতে পারে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। নিহত সকল সহযাত্রী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য সর্বচ্চ জান্নাত কামনা করছি এবং বর্তমানে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদের নিরাপদ জীবন ও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করছি।
লেখক: আরিফুর রহমান দিলু, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএস