মরার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকতে চাই
কিছু ক্ষেত্রে আমি ভীষণ নিয়তিতে বিশ্বাসী। যেমন, কেও অন্যায়ভাবে ভীষণ খারাপ ব্যবহার করলে বিশ্বাস করি তার জন্যও তাই বরাদ্দ আছে কোথাও। অর্থ সম্পদের ক্ষেত্রে খুব চাহিদা নেই, কিন্তু বিশ্বাস করি আমার জন্য ঠিক যতটুকু বরাদ্দ তা আমি পাবই। একই রকম বিশ্বাস মৃত্যুর ক্ষেত্রেও।
যেদিন বাবু হলো, অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার আগে শরীরে জড়ানো ছিল হসপিটাল প্রদত্ত পোশাক, নিজের বলতে চুলের ব্যান্ড - সেটাও খুলে ফেলা হলো শেষ মুহূর্তে। এক অদ্ভুত ভয়ংকর অনুভূতি কাজ করলো। মা কে বললাম, মা একদম শূন্য হয়ে যাচ্ছি। মা বলেছিল, পূর্ণ হয়ে আসো মা।
কিন্তু ভেতরের হাহাকার বোঝানো যাচ্ছিল না। অপারেশন থিয়েটারের বেডে শুয়ে মনে হলো, এখন মরে গেলে প্রিয় মুখ গুলো আর দেখতে পারবো না। কিন্তু নিয়তির হাতে নিজেকে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই আমার। মানুষ কি পরিমাণ অসহায় প্রকৃতির কাছে সেদিন প্রথম বুঝেছিলাম।
চব্বিশ ঘণ্টা পর কর্তার সাথে যখন দেখা হলো, প্রথম কথাটি সে বলল, 'প্রকৃতিতে তোমার আমার প্রয়োজন শেষ সান্ত্ব। এরপর যতটুকু তা উদ্বৃত্ত '। আবেগ হয়তো সব সময় বেঁচে থাকাকে এভাবে গ্রহণ করতে চায় না। কিন্তু কথাটি সত্য। বেঁচে থাকার খায়েশ প্রবল বলেই সচেতন থাকার চেষ্টা করছি, আনন্দে বাঁচার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রকৃতিতে প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আমাকে ফুরিয়ে যেতেই হবে। নিয়তির এই বিধি মানতেই হবে। তাই মরার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকতে চাই।
লেখক: একজন নারী উদ্যোক্তা ও শিক্ষিকা। ফাউন্ডার, অহল্যা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস