বেছে বেছে নেতাকর্মীদের হত্যা করছে সরকার
ঢাকা: “সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা বেছে বেছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করছে” বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান একথা বলেন।
রংপুরের মিঠাপুকুরে নাজমুল হুদা লাভলুকে গুলি করে হত্যাসহ সারাদেশে সরকার দলীয় ক্যাডার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নৈরাজ্য সৃষ্টির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা বেছে বেছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করছে। রংপুর, গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চল সরকারের অত্যাচার এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে এক বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ, মহিলা এমনকি স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরাও সরকারের নির্মম অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
শফিকুর রহমান বলেন, “৮ মার্চ সন্ধ্যায় শ্রমিক নেতা নাজমুল হক লাভলুকে তার বোনের বাসা থেকে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে যায়। ভোররাতে তাকে গুলি করে হত্যা করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশ পাঠিয়ে দেয়। ধরে নিয়ে মানুষ হত্যা করে সরকার একদিকে সংবিধান লঙ্ঘন করছে, অপরদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। আমরা সরকারের এ নির্মমতা ও নৃশংসতার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বলেন, “সরকার পরিকল্পিতভাবে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৪ জানুয়ারি জামায়াত নেতা আল-আমীন, তার স্ত্রী বিউটি বেগম ও প্রতিবেশী মৌসুমীকে তাদের বাড়ি থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে নিয়ে যায়। ১ ফেব্রুয়ারী মিঠাপুকুরের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান জনপ্রিয় নেতা আবদুল বাসেত মারজানকে ঢাকা থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করে। আজ পর্যন্ত তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়নি এবং পরিবারের কাছেও ফেরত দেয়া হয়নি। গাইবান্ধায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একই দিনে হত্যা করেছে ৩ জনকে। দিনাজপুরে হত্যা করেছে একজনকে। এভাবে সরকার বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলকে এক রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করেছে। সরকারের এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাচ্ছি।"
তিনি বলেন, “সরকার দেশব্যাপী গণগ্রেফতারের অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মসজলিসে শূরা সদস্য ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের টীম সদস্য মাওলানা তৈয়বুজ্জামানকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। তাছাড়া রাজধানী ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের শতাধিক নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আছেন, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাস্টার আবদুল কাদের।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “হত্যা, জুলুম, নির্যাতন গ্রেফতার করে জনগণের আন্দোলন দমন করা যায় না। আমি হত্যা, জুলুম নির্যাতন বন্ধ করে জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানাচ্ছি ।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/আরআর/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম