বিএনপি’র বিবৃতি
গ্রেফতার গণআন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারেনা
ঢাকা: আজ (বুধবার) এক বিবৃতিতে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “স্থিতিশীলতা, শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জাতীয় আকাঙ্খা পূরণের লক্ষ্যেই চলমান গণআন্দোলন যৌক্তিক পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের অংশগ্রহণে জনগণের স্বত:স্ফুর্ত আন্দোলনকে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে স্তব্ধ করার উদ্ভট পরিকল্পনা শাসকশ্রেণীর চিন্তার দৈন্যতা ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশ ও জাতির কল্যানে গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছেন। গ্রেফতারী পরোয়ানা গণআন্দোলনকে বন্দী করতে পারেনা বরং অবৈধ সরকারের দেউলিয়াত্বই প্রমাণ করে।”
তিনি বলেন, ‘‘শাসকগোষ্ঠীর অন্ধ প্রতিহিংসা, বিদ্বেষমূলক রাজনীতি ও উগ্র ক্ষমতালিপ্সার শিকারে পরিণত হয়েছে দেশের সকল বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও গণতন্ত্রপ্রিয় সাধারণ মানুষ। দমন-পীড়ণে জর্জরিত হচ্ছে গণমাধ্যম কর্মী, সাংবাদিক, সম্পাদক ও মালিকগণ; একের পর এক সংবাদ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বিনা অজুহাতে। সর্বশেষ অনলাইন নিউজ পেপার ‘জাস্ট নিউজ বিডি ডট কম’ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারণ; তার মালিক ও সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারী জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে প্রশ্ন করেছেন। অবশ্য যে দেশে জমিনে দাড়ানোর সাহস না পেয়ে গাছের উপরে উঠে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর কারণে জালাল উদ্দিনকে গ্রেফতার হতে হয়, সেখানে মুশফিকের আচরণ চরম ধৃষ্টতা হিসেবেই গণ্য হবে, এটাই স্বাভাবিক। জনগণের ভয়ে সরকার কি পরিমানে ভীত সন্ত্রস্ত এটা তারই একটি মাপকাঠি হতে পারে। সাংবাদিক নির্যাতন, ভয়-ভীতি প্রদর্শণ ও নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভখ্যাত গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করে প্রকারান্তরে অবৈধ সরকার নিজের অসহায়ত্বই প্রমাণ করছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার নিস্ফল প্রয়াস ব্যর্থ হতে বাধ্য।’’
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব গ্রেফতারকৃত সকল সম্পাদক, মালিক ও সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করে বলেন, ‘‘অতীতে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ এবং সাংবাদিক নির্যাতন কোন সরকারকেই পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি, এই সরকারকেও পারবেনা। আমরা এসকল ঘৃন্য তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বন্ধকৃত সকল গণমাধ্যম খুলে দেয়ার ও আহবান জানাচ্ছি।’’
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন বলেন, “গতরাতে ফেনীর ফতেহপুরে জেলা ছাত্রদল নেতা আরিফুর রহমানকে গ্রেফতার করতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ পিতা মফিজুর রহমানকে যৌথবাহিনী নিজ বাড়ীতেই নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ধরনের বর্বর হত্যাকান্ডের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। প্রধানমন্ত্রীর হুকুমের উত্তাপে এ জাতীয় নাৎসী কায়দায় দেশব্যাপী জঘন্য হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। সময়ের পট পরিবর্তনে এ জাতীয় সকল হত্যাকান্ডের বিচার করা হবে উপযুক্ত আদালতে। অবৈধ সরকার হত্যা নির্যাতনের উন্মত্ততায় মূলত: জনগণকে আতঙ্কিত করে তুলে রাষ্ট্রক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যা, গুম, অপহরণ, গণগ্রেফতার করে মূলত: সরকার নিজের নিরাপদ অবতরণের পথকেই ক্রমশ: সংকুচিত করে যাচ্ছে ।’’
প্রধানমন্ত্রীকে গণদাবি মেনে নিয়ে দ্রুত পদত্যাগ করার আহবান জানিয়ে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, "এখনও সময় আছে, ফ্যাসিবাদী একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের উন্মাদনা ও ব্যর্থ প্রচেষ্টা থেকে সরে এসে দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পূণঃপ্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করুন। অন্যথায়, ইতিহাসের ঘৃন্য স্বৈরশাসকদের মতোই নির্মম পরিণতির ভাগ্য বরণ করতে হবে।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম