ভোটাধিকার আদায়ে আবার রাজপথে নামতে হবে: মির্জা ফখরুল
ফাইল ছবি
ভোটাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ৫ আগস্টের মতো জনগণকে আবারও রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেশের জন্য প্রয়োজনে আরেকটা লড়াই হবে। ভোটের অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, নিজের অধিকার আদায়ে সবাইকে ৫ আগস্টের মতো আবারও রাজপথে নেমে আসতে হবে। দেশের সংস্কার চান, নাকি হাসিনার নৌকায় যাবেন, সিদ্ধান্ত জনগণের। ভোট চাইতে আসি নাই। দেশ, মাটি ও মানুষের জন্য প্রয়োজন হলে আবারও ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে।
আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে হত্যা করতে চেয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন কেউ যেন দেশকে বিভক্ত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি। সেজন্য আমি সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীকে অনুরোধ করতে চাই; আসুন, এই সুযোগ আমরা কাজে লাগাই। আবার আমরা বাংলাদেশকে সমস্ত বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গড়ে তুলি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণকে বোকা বানিয়ে তিনটা নির্বাচন করে জোর করে ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ভেবেছিলেন, কোন দিন ক্ষমতা থেকে যাবেন না। কিন্তু দেখেন, কীভাবে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। যে নেত্রী বলেছিলেন, আমি পালাই না, আমি ভয় পাই না, আমি মুজিবের বেটি, আমি পালাই না।
মির্জা ফখরুল বলেন, কাহাও কাহাও (কেউ কেউ) কহচে (বলছে) যে ৭১ ভুলে যাবে। একাত্তরকে আমরা ভুলতে পারি না। ৭১-এ আমাদের স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছে। আমি আমার নিজেকে চিনতে পেরেছি ৭১ সালে। আমরা নিজের একটা ভূখণ্ড তৈরি করতে পেরেছি। আমরা ওপরে ওঠার একটা সুযোগ পেয়েছি। সেই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, দেশ ছেড়ে ওপারে পালিয়ে গিয়ে হাসিনা ওখান থেকে ষড়যন্ত্র করছে, চক্রান্ত করছে। মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এখানে নাকি আমাদের হিন্দু ভাইদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। আমরা খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা সব সময় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং মুসলমান একসঙ্গে বসবাস করি।
ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের ভাইয়েরা যারা ১৫ বছর লড়াই করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা নিজেদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আমাদের জন্য আবার একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। যেন আমরা দেশে আবার একটা গণতান্ত্রিক পথ সৃষ্টি করতে পারি। আমরা এখানে সব মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। কেউ ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেন নাই। এই ভোটের অধিকারটা আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই।
দলের সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ‘ভিশন বাংলাদেশ টুয়েন্টি-থার্টি’ দিয়েছিলেন। আর আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব ২০২২ সালে ৩১ দফা দিয়েছেন। সেই ৩১ দফা কী, সংস্কার প্রস্তাব। এই সংস্কারটা আমরা চাই। এই সংস্কার বলতে বুঝি, আমরা যেন ভোটটা দিতে পারি, আমাদের দেশে যেন শান্তি থাকে, জিনিসপত্রের দাম যেন কম হয়, মারামারি যেন না হয়, চুরি–ডাকাতি যেন না হয়। আর কথায় কথায় ঘুষ যেন দিতে না হয়। এ রকম একটা বাংলাদেশ আমরা চাইছি।
জনসভায় সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীনসহ দলটির অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি