News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
আপডেট: ১২:৪৩, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

আ. লীগ গণতান্ত্রিক দল নয়, তাদের খোলসটা ছিল গণতন্ত্রের: মির্জা ফখরুল

আ. লীগ গণতান্ত্রিক দল নয়, তাদের খোলসটা ছিল গণতন্ত্রের: মির্জা ফখরুল

কথা বলছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতো না বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা গণতান্ত্রিক দল নয়, তাদের খোলসটা ছিল গণতন্ত্রের। 

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ৯টায় যশোর বিডি হলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলন ও আজকের পরিপ্রেক্ষিত নাগরিক ভাবনা শীর্ষক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 


সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের আত্মাটাকে ধ্বংস করেছে। ৭১’র মাধ্যমে দেশের মানুষ একটি গণতান্ত্রিক মানবিক মূল্যবোধের দেশ গঠন করতে চেয়েছিল। সেটাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ৭১ বাদ দিয়ে কোনো চিন্তা করা সম্ভব না। ৭ নভেম্বর আমাদের আলাদা পরিচয় এনে দিয়েছিল। আজকে আমাদের সামনে বিরাট ক্রান্তিকাল। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানকে কাজে লাগিয়ে মানবিক গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে হবে।'


তিনি আরো বলেন, 'আমরা ১৪ বছর আন্দোলন করেছি। কিন্তু গোলটা দিয়েছে ছাত্ররা। আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখনো মামলা চলছে। ১৬ বছর বিএনপি কর্মীরা নিদারুণ কষ্ট ভোগ করেছে। সব আত্মত্যাগ মনে রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।'


তিনি বলেন, 'এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নানা দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। এতদিন তারা কথা বলতে পারেনি। তাদের বুঝিয়ে ঘরে ফেরাতে হবে।' 


মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'সংস্কার আমরা প্রথম থেকেই চাইছি। কেয়ারটেকার বাদ দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ভিশন ২০৩০ দিয়েছিল বিএনপি। ২০২২ সালে আমরা রাষ্ট্র মেরামতে ২৭ ও ৩১ দফা দিয়েছি।'


তিনি বলেন, 'তিনমাসের মধ্যে সবকিছু সমাধান‌ সম্ভব নয়। সংস্কার হতে হবে এবং সেটা টেকসই হতে হবে। গণমতের ভিত্তিতে হতে হবে। এজন্য দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। একটি নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার জরুরি তা করে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে‌। নির্বাচিত সরকার বাকি সংস্কার করবে।' একইসঙ্গে বিএনপি সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করতে চায় বলে জানান তিনি। মানবিক দেশ গঠনে সব দল মতের ঐক্য জরুরি। 


তিনি আরো বলেন, 'ছাত্ররা বিপ্লবী সরকার গঠন করলে আমাদের বলার কিছু ছিল না। কিন্তু এটা সাংবিধানিক সরকার। আপিল বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে। ফলে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্বাচন হতে হবে।'


মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'খালেদা জিয়া সেনাকুঞ্জে যাওয়ায় দেশে আনন্দের নহর বয়ে গেছে। এটা নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। এটাকে ভিত্তি করে সামনে এগিয়ে যেতে পারি সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। বিএনপির নামে দখলের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অসাধুচক্র এই দখলবাজের সঙ্গে জড়িত। এরপরও যেসব কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের সাড়ে ৭শ’ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।'


মির্জা ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, 'এদেশটা আমরা অর্জন করেছি যুদ্ধ করে। ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিজম বিদায় হয়েছে। সকলে মিলে দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশকে বিকশিত করতে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। পুরাতন নতুনদের সমন্বয়ে এগিয়ে যেতে হবে।'


তরুণদের তিনি বলেন, 'হতাশা দূর করে নতুন সূর্যোদয় আপনারা এনেছেন। এই সূর্যের আলোয় আলোকিত করুন দেশকে।'


জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, এ দেশের মানুষ আজন্মকাল অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। শেখ হাসিনার পতন অনিবার্য ছিল। তাদের সর্বস্তরের নেতারা পালিয়েছে। এটা তাদের পূর্বাভ্যাস। একাত্তরেও তারা পালিয়েছিল। ওরা মুক্তিযুদ্ধ করেনি, শেখ মুজিবও মুক্তিযুদ্ধ করেনি‌। ফলে ফ্যাসিস্ট পলাতকদের নিয়ে আলোচনা নয়, ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। রাষ্ট্রে পরিবর্তন আনতে হবে। সমতার ভিত্তিতে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। 


এ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, অ্যাডভোকেট কাজী মণিরুল হুদা, সাবিরা ইসলাম মুন্নি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। 


সভার শুরুতে বিএনপি মহাসচিব ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। একইসঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের পক্ষে সহায়তা দেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়