তারেক রহমানের জন্মদিন আজ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি
আজ ২০ নভেম্বর (বুধবার), বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী নেতার্মীরা জমকালো অনুষ্ঠান উদযাপনের পরিকল্পনা করলেও তবে এবার দলের পক্ষ থেকে তা পালন না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক রহমান ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে। তার ডাকনাম পিনো।
তার বাবা জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং মা খালেদা জিয়া বাংলাদেশের তিনবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী।
তারেক রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়ে মাত্র চার বছর বয়সে মা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বন্দিত্ব বরণ করতে হয়। পিতা জিয়াউর রহমান তখন মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের এক অকুতোভয় বীর যোদ্ধা।
সেনাকর্মকর্তা থেকে সিপাহী জনতার বিপ্লব জিয়াউর রহমানকে দেশের রাষ্ট্রপতির আসনে নিয়ে এলেও তাদের জীবন ছিল সাদামাটা। ঢাকার বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ দিয়ে শুরু করা শিক্ষা জীবনে ৮০র দশকে তারেক রহমান ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিতার মৃত্যুর পর মা বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতির মাঠে যখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল নেতৃত্বে, তখন সেই আন্দোলনে যোগ দেন তারেক রহমানও। ৮৮ সালে বিএনপিতে নাম লেখান জাতীয়তাবাদের এই তরুণ নেতা।
৯১ সালের নির্বাচনে মা বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে তৃণমূলে বিএনপিকে শক্তিশালী করায় মনোযোগ দেন তারেক রহমান। ৯৪ সালে ডাক্তার জোবায়দা রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটি তারেক রহমানকে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মনোনীত করে ২০০২ সালে।
পিতার আদর্শ লালন করে ২০০৫ সালে দেশব্যাপী তৃণমূল সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে প্রান্তের মানুষের কাছে সাড়া জাগানিয়া বার্তা দেন তারেক রহমান।
২০০৭ এর ৭ই মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে সেনাসমর্থিত সরকার। দায়ের করা হয় ১৩ টি দুর্নীতির মামলা। কারাবরণ আর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে যেতে হয় হাসপাতালে। প্রায় ১৮ মাস কারাবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়ে ২০০৮ সালে ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছর লন্ডনে থেকেই জাতীয়তাবাদের পতাকাকে দিক নির্দেশনা ও নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক রহমান। হয়েছেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। স্ত্রী ডাক্তার জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে নির্বাসিত জীবনে তারেক রহমান হারিয়েছেন ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে। প্রিয় মা বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্ব আর অসুস্থতা দূর পরবাসে তাকে কষ্টের কাছে অসহায় করে তুলেছে।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবনের বড় অংশই ছিল নির্বাসিত জীবন। ৫৭ বছর বয়সী তারেক রহমানের ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবন নানা ঘাত প্রতিঘাতের সাক্ষী।
তারেক রহমানের জন্মদিনে কোনো অনুষ্ঠান না করতে বিএনপির নির্দেশনা
তারেক রহমানের জন্মদিন এ বছর উদ্যাপন না করতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি। গত সোমবার দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন। দেশব্যাপী বিএনপি ও এর অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের বিশেষভাবে জানানো যাচ্ছে যে, এ দিন তারেক রহমানের জন্মদিন নিয়ে কোনো অনুষ্ঠান হবে না।
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কেউ অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয় ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি