‘সম্প্রীতি, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটালে কঠোর ব্যবস্থা’
ছবি: সংগৃহীত
“সম্প্রীতি, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটে এমন কর্মকাণ্ডে যারাই লিপ্ত হবে, তাদের পরিচয় বিবেচনা না করে সবার ক্ষেত্রেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, “এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এরইমধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দোষী অন্যদেরও শনাক্ত করা হচ্ছে এবং শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। সব দুষ্কৃতিকে বিচারের আওতায় আনা হবে।”
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, সরকার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পুনর্ব্যক্ত করছে যে, গণসহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং গোঁড়ামির কোনো স্থান বাংলাদেশে হবে না। সম্প্রীতি, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটে এমন কর্মকাণ্ডে যারাই লিপ্ত হবে, তাদের পরিচয় বিবেচনা না করে সবার ক্ষেত্রেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সরকার এ বিষয়ে সতর্ক করে দিচ্ছে।”
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিবাদে বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়।
ঘোষণা অনুযায়ী ‘আদিবাসী ছাত্রজনতা’র ব্যানারে শিক্ষার্থীরা বুধবার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে উপস্থিত হলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে থাকা ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’র সদস্যরা তাদের ওপর চড়াও হয় এবং বেধড়ক লাঠিপেটা করে। হামলায় আহত নয়জনকে পরে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ওই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দুই সংগঠনের নেতারাই দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।
আর আদিবাসী শিক্ষার্থীরা হামলার ঘটনার বিচার ও আদিবাসী লেখা চিত্রকর্ম পুনর্বহালের দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভ এবং শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি