শেখ পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধান ও পাচারের টাকা ফেরাতে বিশেষ দল
ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান ও পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনতে ১০টি বিশেষ যৌথ তদন্ত দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
একই সঙ্গে এসব দল সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ ১০ ব্যবসায়ী গ্রুপের দুর্নীতি অনুসন্ধানের পাশাপাশি পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেবে।
প্রতিটি দল হবে তিন সদেস্যর। এর মধ্যে একজন করে দলনেতা থাকবেন ও দুজন সদস্য থাকবেন। মূলত দুদক, সিআইডি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সমন্বয়ে এই দলগুলো কাজ করবে। টিমগুলোর সার্বিক কর্মকাণ্ড সমন্বয় করছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)। ইতোমধ্যে এসব টিম কাজ শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুদকের এক বিশেষ সভায় এসব দল গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে আরও একটি বিশেষ দল গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।
এখন পর্যন্ত ব্যাংক লুট, মেগা প্রকল্পের অর্থ অপব্যবহার এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ ওঠায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য ইতোমধ্যে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতির তদন্ত চলছে।
এস আলম, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা এবং আরো কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের অনিয়ম ও পাচার হওয়া অর্থের তদন্ত করছে দলগুলো। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী এই তদন্ত চলছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলা দায়ের ও অর্থ ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। এ কাজের সমন্বয় করছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর ওই সরকারের আমলে ঘটা দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউ তদন্ত শুরু করে। তাতে ব্যাংক লুট, টাকা পাচার এবং ব্যাপক দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসে। গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সেগুলো শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউ’র পক্ষে তদন্ত করা সম্ভব নয়। ফলে আরো ১০টি বিশেষ দল গঠন করলো দুদক।
দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, নামে-বেনামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন। এর সঙ্গে কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ মেগা প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। শিগগিরই শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি