News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক  || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩৭, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

অর্থ পাচারের অভিযোগে মাল্টার পাসপোর্ট বাগাতে ব্যর্থ টিউলিপের চাচী

অর্থ পাচারের অভিযোগে মাল্টার পাসপোর্ট বাগাতে ব্যর্থ টিউলিপের চাচী

টিউলিপ সিদ্দিক, শাহীন সিদ্দিক ও তার মেয়ে বুশরা। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রিত্ব হারাতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস। ব্রিটিশ এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পাশাপাশি তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অভিযোগের প্রকাশ্যে আসছে। 

সেই ধারাবাহিকতা এবার জানা গেল, এক দশক আগে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপের শেনজেনভুক্ত দেশ মাল্টার পাসপোর্ট বাগিয়ে নেওয়ার ফন্দি করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিকের চাচী শাহীন সিদ্দিক এবং তার চাচাত বোন বুশরা সিদ্দিক। তবে তাদের পাসপোর্ট দেয়া হয়নি। 

শাহীন সিদ্দিকের স্বামী হলেন মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, যিনি ক্ষমতাচ্যুত এবং ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ছিলেন।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে নিজের জন্য মাল্টার পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন শাহীন সিদ্দিক। ওই সময় বিনিয়োগের মাধ্যমে মাল্টার পাসপোর্ট দেওয়ার কাজটি করত হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে শাহীন সিদ্দিক প্রচ্ছায়া নামের একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ঢাকার মূল্যবান সরকারি জমি কুক্ষিগত করা তথ্য পায়। আর শাহীন তার পাসপোর্টের উল্লেখ করে বলেছিলেন, তিনি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান। এ কারণেই তখন তাকে পাসপোর্ট দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

এরপর ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বার আবেদন করেন শাহীন সিদ্দিক। এবার তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রামের দ্য আর্ট প্রেস নামের একটি কোম্পানির পরিচালক তিনি, যেটি ১৯২৬ সালে তার বাবা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে এই কোম্পানি নিয়ে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তাকে ও তার মেয়েকে ওই সময় আর পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি।

শাহীন ও তার মেয়ে বুশরা ২০১৫ সালে পাসপোর্টের জন্য যে আবেদন করেছিলেন, সেটি পেতে তাদের যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার পাউন্ড লাগত। এরসঙ্গে ফি হিসেবে আরও ৭০ হাজার পাউন্ড নিত হেনলি।

আবেদনের অংশ হিসেবে শাহীন মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরের একটি ব্যাংকের হিসাবে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার জমা দেখিয়েছিলেন। ১১ বারে এই অর্থ তার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছিল। তবে এসব অর্থের উৎস কী ছিল সেটি স্পষ্ট নয়। 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টার‌ন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যে আইন আছে তা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি বিদেশে নিতে পারবেন না।

অপরদিকে তারেক ও শাহীন সিদ্দিকের মেয়ে ওই সময় স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে পড়াশোনা করছিলেন। তিনি তার ঠিকানা দিয়েছিলেন গ্র্যান্ড গোথিক ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট। যেটি টিউলিপের লন্ডনের কিংস ক্রস ফ্ল্যাটের খুব কাছে অবস্থিত। এই ফ্ল্যাটটি ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তিনি কেন টিউলিপকে এত দামী ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

বুশরা লন্ডনে পড়াশোনা শেষে জেপি মর্গান ব্যাংকে কয়েকদিন চাকরি করেন। এরপর চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৮ সালে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরোতে পাঁচ বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট কেনেন তিনি। এই অর্থও তাকে তার বাবা-মা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অক্টোবরে তারিক জামিল সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয়। 

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়