News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক  || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আরও ৮৫০ বাংলাদেশির সম্পদের সন্ধান মিলল দুবাইতে 

আরও ৮৫০ বাংলাদেশির সম্পদের সন্ধান মিলল দুবাইতে 

ফাইল ছবি

দুবাইতে আরও ৮৫০ বাংলাদেশির তথ্য পাওয়া গেছে। রূপকথার গল্পকেও যেন হার মানিয়েছে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের নামে-বেনামে অর্থ পাচারের ঘটনা। পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্বারস্থ হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, চলছে অভ্যন্তরীণ তদন্তও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাস্কফোর্সের এক সদস্য বলেন, সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোর সীমাবদ্ধতার কারণে অর্থ পাচারকারীদের সম্পত্তির তথ্য সংগ্রহ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে এরা সম্পদ গড়েছে। এদের সম্পদের তথ্য জানাতে নিবন্ধন অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েও কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। অবস্থা এমন বেগতিক যে, গাজীপুরে এক সন্দেহভাজনের সম্পত্তি থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার প্রেক্ষিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) থেকে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি পাঠানো হয়। 

সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে শূন্য প্রতিবেদন পাঠানো হয়, অর্থাৎ গাজীপুরে ওই ব্যক্তি নামে কোনো সম্পত্তির তালিকা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে নেই। পরবর্তী পুলিশ নিজস্ব লোকবল পাঠিয়ে বালাম বই তল্লাশির মাধ্যমে ওই ব্যক্তির নামে থাকা ৭০টি সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সম্পদ পুনরুদ্ধারের আরেকটি জটিলতা হচ্ছে, অর্থ পাচারকারীরা বেশিরভাগ সম্পদ বেনামে গড়েছেন। পর্যাপ্ত তথ্য থাকার পরও শুধু আইনি জটিলতার কারণে সেইসব সম্পদ জব্দ করা যাচ্ছে না। 

সম্প্রতি প্রকাশিত অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই অর্থ গত ৫ বছরে দেশের জাতীয় বাজেটের চেয়ে বেশি। আলোচ্য সময়ে প্রতি বছর পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাভেদ আয়কর বিভাগে যেই রিটার্ন জমা দিয়েছেন, তাতে তার সম্পদের পরিমাণ ১৮ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়। আয় দেখান ৭৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে তিনি আয়কর দিয়েছেন মাত্র ১৯ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তিনি সম্পদ দেখিয়েছেন মাত্র ১৭ কোটি টাকার। আর বছরে মোট আয় দেখিয়েছেন মাত্র ৭৪ লাখ টাকার। আর দুটি গাড়ি থাকলেও তিনি আয়কর ফাইলে একটির কথা উল্লেখ করেছেন। আয়কর ফাইলে দেখানো গাড়ির দাম উল্লেখ করেছেন ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা। আয়কর নথিতে ব্যাংকের স্থিতি দেখিয়েছেন ১ কোটি ৮৬ লাখ ৭২ হাজার ২৩৫ টাকা। 

অথচ সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সাবেক এই মন্ত্রী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। ব্রিটেন ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়াতেও তিনি ৫শরও বেশি বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকারও বেশি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির এক কর্মকর্তা বলেন, জাভেদের রিটার্ন পর্যালোচনাসহ ফাইল ওয়ার্ক প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন বিএফআইইউ থেকে প্রাপ্ত সম্পদের তালিকার বিষয়টি যাচাই করতে দুবাই সরকারকে চিঠি দেওয়া হবে। 

একই সঙ্গে দুবাইতে বাংলাদেশি আরও ৮৫০ জনের সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যেগুলো তারা রিটার্নে প্রদর্শন করেননি। জাভেদসহ এ ধরনের ব্যক্তিদের সম্পদ অনুসন্ধানে পৃথক দুটি টিম শিগগিরই দুবাই যাবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়