অন্তর্বর্তী সময় পার করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: তথ্য উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক হওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, বহু আগে থেকে বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যে সংস্কারের কথা বলছিল, এরই ধারাবাহিকভাবে আমরা এই সরকার সংস্কারের কথা বলছি। আহ্বান থাকবে আমরা বর্তমানে কী করছি এবং ভবিষ্যতে কী থাকবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারটি এতদিন ছিল না। তাই বিগত সরকারকে সরাতে গণ-অভ্যুত্থান প্রয়োজন ছিল। ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারটি কিভাবে গণতান্ত্রিক হবে তা নিশ্চিত করতে হবে। সহিংস বা প্রতিহিংসার রাজনীতি যাতে ফিরে না আসে, সেই ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় আমাদের ঐক্যে পৌঁছাতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা সংস্কারকে এ জন্য গুরুত্ব দিয়েছি; যা ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলো বলেছিল।
এ সময় আন্দোলনরত আমলাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, যারা আন্দোলনের নামে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করছে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারের ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও সরকারের প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা সাম্প্রতিক সময়ে আমলাদের বক্তব্য শুনতে পারছি। তারা একধরনের হুমকি দিচ্ছে। এটার সাহস তারা পেয়েছে বিগত সময়ে, সেই সময় দেখেছি আমলাতন্ত্রকে শক্তিশালী করা হয়েছে। আমলাতন্ত্র নির্ভরতাকে কাজে লাগিয়ে ফ্যাসিজম তৈরি করা হয়েছে।
এ সময় সঞ্চালক সাইয়েদ আবদুল্লাহ প্রশ্ন করে বলেন, অভিযুক্ত আমলাদের বিরুদ্ধে সরকার দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না?
জবাবে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, এটা নিয়ে আজকেও (শুক্রবার) বৈঠক করেছি। আগামী সপ্তাহেও কঠোর পদক্ষেপ আসবে। যারা আন্দোলনের নামে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করছে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমলাদের বলছি এখন সময় জনগণকে সেবা দেওয়ার। গণতান্ত্রিক ট্রানজিশনটা সঠিকভাবে করার সহযোগিতা করার। আন্দোলন আন্দোলন খেলা কিংবা গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষার জন্য এত মানুষ জীবন দেয় নাই।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কার হলে সকলেই ন্যায়বিচার পাবেন। সংস্কারে তাদেরও মত থাকবে, তাদের কথা শোনা হবে। সংস্কার সুপারিশে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এটা তাদের নৈতিকভাবে ঠিক হয়নি। তারা বিধিগত ভাবেও লঙ্ঘন করেছে। বিগত রেজিমের আমলারা নানাভাবে লুকিয়ে আছে, তাদের চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের ইতিবাচক সৌহার্দ্য ও ঐকমত্য আছে। পাশাপাশি সরকারে ভুল ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে তারা সমালোচনা করছে। সেগুলো আমরা অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পরে যে ধরনের সরকার গঠন হয়েছে, তা ডিফাইন করা যাচ্ছে না। এক অর্থে সরকার সাংবিধানিক সরকারও নয়, আরেক অর্থে বৈপ্লবিক সরকারও নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্বর্তী সময় পার করছে।
তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের ইঞ্জিনিয়ারিং মূলত আমাদের দেশে প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের বৈদেশিক নীতিতে ঐকমত্য দরকার। একক বৈদেশিক নীতি থাকা উচিত। জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমলাতন্ত্র নির্ভর করে ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে তা আমরা স্বীকার করছি এবং সেখান থেকে কিভাবে বের হওয়া যায় তা চিন্তা করছি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি