এনআইডির তথ্য পাচার, বিসিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল ইসি
ফাইল ছবি
শর্ত লঙ্ঘন করে অন্য পক্ষকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য দেওয়ায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। সেইসঙ্গে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য যাচাই-বাছাই করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন হতে এনআইডির তথ্য-উপাত্ত যাচাই সেবা গ্রহণকারী সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ১৮৩টি। যার মধ্যে বাংলাদেশ কম্পিটার কাউন্সিল (বিসিসি) অন্যতম। গত ৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখ নিবন্ধনের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত যাচাই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে বিসিসির দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। উক্ত চুক্তিপত্রের শর্তানুযায়ী দ্বিতীয় পক্ষ (বিসিসি) কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো ব্যক্তি, স্বত্ত্বা, পক্ষ বা প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর, বিনিময়, বিক্রয় কিংবা অন্য কোনো পন্থায় প্রদান করতে পারবে না মর্মে শর্ত থাকলেও বিসিসি কর্তৃক তা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
আরও বলা হয়, এ বিষয়ে ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে বিসিসির নিকট ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও বিসিসি জবাব দানে বিরত থাকে। পরবর্তীতে গত ৬ অক্টোবর তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব প্রদানের জন্য বলা হলে বিসিসি কর্তৃক যে জবাব দেওয়া হয় তা নির্বাচন কমিশনের নিকট সন্তোষজনক নয় মর্মে গণ্য হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, তদপ্রেক্ষিতে, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তক্রমে নিবন্ধনের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত যাচাই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে বিসিসির ৪ অক্টোবর সম্পাদিত চুক্তিটি ২০ ডিসেম্বর বাতিল করা হয়েছে এবং বিসিসিকে প্রদত্ত এপিআই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ ছাড়া পত্র প্রেরণের ১৫ দিনের মধ্যে সমুদয় বকেয়া ফি/চার্জ পরিশোধপূর্বক চালানের কপি দাখিল করার জন্য বিসিসিকে অনুরোধ করা হয়েছে।
মহাপরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে এনআইডি’র তথ্য-উপাত্ত যাচাই সেবা গ্রহণকারী সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ১৮৩টি। যার মধ্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) অন্যতম। গত ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর নিবন্ধনের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত যাচাই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিসিসি’র দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়। চুক্তিপত্রের শর্তানুযায়ী দ্বিতীয় পক্ষ (বিসিসি) কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো ব্যক্তি, সত্তা, পক্ষ বা প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর, বিনিময়, বিক্রয় কিংবা অন্য কোনো পন্থায় প্রদান করতে পারবে না। কিন্তু বিসিসি তা লঙ্ঘন করেছে।
হুমায়ুন কবীর বলেন, চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিসিসি’র কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকে। পরবর্তীতে গত ৬ অক্টোবর তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। এতে যে জবাব দেওয়া হয় তা নির্বাচন কমিশনে সন্তোষজনক নয় মর্মে গণ্য হয়েছে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী প্রযোজ্য ফি/চার্জসমূহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিসিসি থেকে পরিশোধ না করায় নির্বাচন কমিশনের কাছে চুক্তিটি বাতিলযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। চুক্তি বাতিল করে বিসিসিকে দেওয়া এপিআই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্যভান্ডার থেকে অন্তত ৫ কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপন তথ্য বিক্রি হয়েছে। তা নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি দেশি-বিদেশি শতাধিক প্রতিষ্ঠান। তালিকায় আছে এনজিও-ও। এসব তথ্য বিক্রি করে আসছে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতি একজন ব্যক্তির তথ্যের জন্য ৫, ১০ ও ১৫ টাকা হারে আদায় করছে প্রতিষ্ঠানটি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি