শেখ পরিবারকে নিয়ে সিনেমা বানাতে ৫৭৪ কোটি টাকার প্রকল্প
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিনেমা বানাতে ৫৭৪ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যে ১০টি সিনেমা নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৭৮ কোটি টাকা। বাকি ১৯৬ কোটি টাকা ওই সব চলচ্চিত্র নির্মাণ তদারকির জন্য খরচ ধরা হয়েছিল।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভবিষ্যৎ প্রকল্পর তালিকায় এ প্রকল্প স্থান পায়। সরকারি ভাষায় যাকে ‘সবুজ পাতার ফাইল’ বলা হয়। সেই আমলেই ভবিষ্যৎ প্রকল্পের তালিকায় এ প্রকল্প স্থান পায়।
এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কেন চলচ্চিত্র বানাবে? প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিশেষ আগ্রহে ওই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলেন, সরকারের হাইকমান্ডকে খুশি করে লুটপাট করতে এই প্রকল্প নেওয়া হয়।
এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য ৩৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের পাশাপাশি বাকি ১৯৬ কোটি টাকা রাখা হয়েছিা প্রকল্পর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও চলচ্চিত্র নির্মাণে তদারকির জন্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শেখ পরিবারের জন্য যে ১০টি ছবি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তাতে গড়ে ৫ কোটি টাকা করে খরচ করলে পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ কোটি টাকা। সেটা দ্বিগুণ হলে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তাহলে বাকি ৪৭৪ কোটি টাকা কোন খাতে খরচ করা হতো। এটা আমাদের প্রশ্ন। কিন্তু দুর্ভাগ্য এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো এখন আর কেউ নেই। কারণ, এসব প্রকল্প নাকি নেওয়া হয়েছে তৎকালীন সরকারের ওপর মহলের নির্দেশে। তাই কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এসব বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না।
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে কমিটির প্রধান তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) মাহবুবুর রহমান বলেন, চলমান প্রকল্পর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের ২৫টি ভবিষ্যৎ প্রকল্প নিয়েও আমরা কাজ করছি। এসব প্রকল্পর জন্য কয়েক হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেখানে নানা ধরনের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির পথ দেখতে পেয়েছি। এরই মধ্যে প্রকল্পর অবস্থা দেখে ৮টি সরাসরি বাদ দেওয়া হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি প্রকল্পে কাটছাঁট করা হবে। অর্থাৎ লুটপাট আর অনিয়ম করতেই ওই সব প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।
৫৭৪ কোটি টাকার প্রকল্প সম্পর্কে কমিটির প্রধান বলেন, ওই প্রকল্পে ৩৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ১০টি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য।
প্রথমত, শেখ পরিবারকে নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কেন চলচ্চিত্র নির্মাণ করবে?
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেসব চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয় তার নির্র্মাণ ব্যয় এত কোটি টাকা কীভাবে হয়? এসব দিক বিশ্লেষণ করে শুরুতেই ওই প্রকল্প বাদ দিয়েছি।
এদিকে তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য ৩৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের পাশাপাশি বাকি ১৯৬ কোটি টাকা রাখা হয়েছিা প্রকল্পর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও চলচ্চিত্র নির্মাণে তদারকির জন্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শেখ পরিবারের জন্য যে ১০টি ছবি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তাতে গড়ে ৫ কোটি টাকা করে খরচ করলে পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ কোটি টাকা। সেটা দ্বিগুণ হলে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তাহলে বাকি ৪৭৪ কোটি টাকা কোন খাতে খরচ করা হতো। এটা আমাদের প্রশ্ন। কিন্তু দুর্ভাগ্য এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো এখন আর কেউ নেই। কারণ, এসব প্রকল্প নাকি নেওয়া হয়েছে তৎকালীন সরকারের ওপর মহলের নির্দেশে। তাই কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এসব বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিগত সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্তদল গঠন করে। ওই কমিটি এখন কাজ করছে। কমিটিতে অডিট বিশেষজ্ঞ, আইন বিশেষজ্ঞরাও আছেন। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরবেন। ওই কমিটি এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণ পেয়েছে। চলমান প্রকল্পের পাশাপাশি কমিটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের ২৫টি ভবিষ্যৎ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি