হাসিনার পতনে বাংলাদেশ-বিরোধী মনোভাব উস্কে দিচ্ছে ভারতের গণমাধ্যম
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলার ঘটনায় ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে ভারতের সংবাদমাধ্যমে উসকানিমূলক খবর প্রচার হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড পেজে ফেসবুক পোস্টেটি দেন তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর কিছু ভারতীয় মহল থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে উস্কানিমূলক মন্তব্য ও রাজনৈতিক বক্তৃতা বাড়ছে। সেখানে এখন ভুল তথ্যে ভরা ইকো চেম্বার রয়েছে, যা ক্রমাগত বাংলাদেশ-বিরোধী মনোভাবকে উস্কে দিচ্ছে। আগরতলায় বাংলাদেশি কনস্যুলেটে সর্বশেষ হামলাটি বিভ্রান্তির অস্থিতিশীল প্রভাবকে তুলে ধরে, যা শুধুমাত্র প্রতিবেশীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করবে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, প্রায় ২০ কোটি জনসংখ্যার একটি অস্থিতিশীল বাংলাদেশ কোনো দেশের স্বার্থে নয়। তবে ভারতকে বিশেষ ব্যক্তি এবং দলের বাইরে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপনের গুরুত্ব বুঝতে হবে বলে তাগিদ তুলে ধরেছেন তারেক রহমান।
তারেক রহমান লিখেন, হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণ কী, তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে কী ঘটছে এবং কেন কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা অপরিহার্য তা বস্তুনিষ্ঠভাবে বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
একইসঙ্গে আগরতলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয়, সে জন্য দেশবাসী এবং সমর্থকদের সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, কিন্তু আমরা মূলত ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের দেশ ছিলাম এবং থাকব, যেখানে জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষিত। আমি আমার সহকর্মী বাংলাদেশীদেরকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের জন্য এবং কোনো উসকানির শিকার না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, ভারতের আগরতলায় সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকেরা এ হামলা চালান।
সোমবার রাত থেকেই এই বিষয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়ে ওঠে বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা। অনেকেই এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছেন।
এদিকে ঘটনার পরপরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগরতলার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়ে তারা বলেছে, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং দেশের (ভারতের) অন্যান্য স্থানে তাদের উপ ও সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি