ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সিলেটে মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের আন্দোলন নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে। দেশের নিষিদ্ধ দু’একটি দলও এর নেপথ্যে থাকতে পারে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করাই বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউজে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সাথে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, এটার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, বাইরেও হয়ত কিছু ইন্ধন আছে। এবং দেশেও দু-একটা পার্টি আছে, তাদের দিক থেকে হয়ত কিছু ইন্ধন আছে। আবার যাদেরকে আমরা ব্যান করে দিছি, তাদের দিক থেকে হয়ত কিছুটা ইন্ধন আছে।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক মাসের চেয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা অনেক ভালো। তবে এখনও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় কিছু শঙ্কা থেকে গেছে। এ সময় মিথ্যা মামলায় কাউকে হয়রানি না করারও নির্দেশ দেন তিনি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সকল পক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। শিগগিরই এ স্থিতিশীল একটি পরিবেশ তৈরি সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে যা ই বলুক না কেন কাজ করে যেতে হবে। কাজ করতে গেলে অনেক সমস্যা-সমালোচনা মোকাবেলা করতে হবে। কি পরিস্থিতির মধ্যে আপনারা কাজ শুরু করেছেন তা সবাইকে বিবেচনা করতে হবে। কেউ প্রশংসা করুক বা না করুক কাজ করে যেতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার পেছনে চাঁদাবাজিও দায়ী। শক্ত হাতে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশে নিয়োগ স্বচ্ছ হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। নিয়োগ ও পোস্টিং বাণিজ্য বরদাশত করা হবে না।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। মব জাস্টিস বিষয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উপদেষ্টা সতর্ক থাকার কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীরা আইনি প্রক্রিয়ায় বের হওয়ার পর পুনরায় অপকর্মে জড়ালে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
ঢাকার মোহাম্মদপুরে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সব বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই মিলে একযোগে কাজ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। যাদের কাছেই অপরাধের তথ্য থাকে তারা তা দিয়ে অন্যদের সহযোগিতা করবেন।
উপদেষ্টা বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে চাঁদাবাজি, হয়রানি বন্ধ করতে হবে। যারা ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করে তারা এসবের সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ ও র্যাবের ক্ষেত্রে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষের সঙ্গে আরও ভালো ব্যবহার করে কোনও ক্ষোভ থাকলে তা কমাতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। কেউ পরিচয় জানতে চাইলে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে হবে। অকারণে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। কেউ অবৈধ আদেশ দিলে তা পালন করবেন না।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার সিলেটসহ সশস্ত্র বাহিনী, জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।