News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ২২ নভেম্বর ২০২৪
আপডেট: ১১:০৫, ২২ নভেম্বর ২০২৪

আ. লীগে যারা নিরপরাধ তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন: ড. ইউনূস

আ. লীগে যারা নিরপরাধ তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের যারা হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে বলে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচারে অপরাধী প্রমাণিত না হলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার পাবে। যারা অপরাধী নয় তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অন্যদের মতোই স্বাধীন। তাদের (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভিত্তিতে লড়াই করব আমরা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

ইউনূস বলেন, শব্দগুলো খুবই বিস্ফোরক, এই তরুণ মস্তিষ্কগুলো অনেক ভাবনা, উচ্চাকাঙ্খা ও আশা-আকাঙ্খায় ভরপুর। তারা তাদের ভবিষ্যতকে এ চিত্রগুলোতে ফুটিয়ে তুলেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন।

তিনি আরও বলেন, আমাকে সরকারের দায়িত্ব নিতে বলায় শুরুতে আমি তা এড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমি বলেছিলাম, ‘কাউকে খুঁজে নাও।’ কিন্তু পরে বললাম, ‘ঠিক আছে, তোমরা তোমাদের জীবন দিয়েছো, তোমার বন্ধুরাও তাদের জীবন দিয়েছে, তাই আমি আমার সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব।’

টাইমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ বাদে সত্যিকার জাতীয় ঐকমত্য সম্ভব না–ও হতে পারে। অন্তত একটা সময় দলটির বিপুল জনসমর্থন ছিল। বর্তমানে দেশে অবস্থান করা আওয়ামী লীগের সদস্যরা বলছেন, তারা কোনো বাছবিচার ছাড়াই নির্বিচার আক্রান্ত হচ্ছেন।

গত জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন জাহিদ মালেক। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি টাইমকে জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করছেন না। কারণ, তিনি হৃদ্‌রোগে ভুগছেন এবং মনে করছেন যে তাকে জামিন দেওয়া হবে না। জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। আমার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। আমি অসুস্থ। চার মাস ধরে আমি পরিবারের সদস্যদের দেখি না।’

টাইমের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকায় যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তি একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিজেদের যোগাযোগ বড় করে তুলে ধরতেন, তাঁরা এখন দলটির সঙ্গে সম্পর্ক গুটিয়ে আনছেন। ভয় পাচ্ছেন যে এই সম্পর্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাঁদের ওপর চড়াও হতে পারেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে শেখ হাসিনার প্রতি সহানুভূতিশীল সাংবাদিকদের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং অন্তত ২৫ জনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সহিংসতার মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

জুলাই ও আগস্টে আন্দোলন চলাকালীন বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগের সরকার সম্পূর্ণ নিপীড়নের পরিবেশ তৈরি করেছিল। হত্যা, গুম ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ধ্বংস সাধন- এটি একটি ফ্যাসিবাদী শাসন ছিল। ড. ইউনূস দাবি করেন, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে সাড়ে ৩ হাজার জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে গুম করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ ( সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে বাংলাদেশের হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা করেছিলেন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। ধারণা করা হয়, ট্রাম্পকে আওয়ামী লীগ ও প্রভাবশালী ভারতীয় আমেরিকানরা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য লবিং করছে।

তবে ড. ইউনূস এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে পারবেন। সাক্ষাৎকারে ড. ইউসূস বলেন, ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। আমরাও ব্যবসা নিয়ে ভাবছি। আমরা কোনো সংকটে সাহায্য করার জন্য বিনামূল্যে টাকা চাইছি না; আমরা একটি ব্যবসায়ী অংশীদার চাই। বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য খোলা রয়েছে।

তবে অনেক ক্ষেত্রে সংস্কারের ধীরগতি সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। দেশটিকে পুনর্গঠিত করার অঙ্গীকার জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে ছয় দফা সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে। যেখানে নির্বাচনি ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি প্রশাসন এবং জাতীয় সংবিধানকে কেন্দ্র করে কাজ করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের দেশের বাইরে পাচার করা হাজার কোটি ডলার পুনরুদ্ধার করবেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়