নিয়োগে সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতার ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে: টিআইবি
রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া বা না দেওয়ার চর্চা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, কোথাও কোথাও পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করা হয়েছে। নিয়োগে বিপরীতধর্মী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়।
‘নতুন বাংলাদেশ’ কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী ১০০ দিনের ওপর পর্যবেক্ষণ শীর্ষক এক গবেষণার ফলাফলে এসব কথা বলা হয়। সোমবার গবেষণার ফলাফলের প্রতিবেদনটি টিআইবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে ‘প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার’ অংশে নিয়োগ ও রদবদল প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কর্তৃত্ববাদী সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও অন্যান্য কর্মকর্তার পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও পদের মধ্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার, বিচার বিভাগ, আইন কমিশন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় (উপাচার্য) ও কলেজ (অধ্যক্ষ), ব্যবসায় সমিতি, রাষ্ট্রীয় ও বাণিজ্যিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক (গভর্নর, উপদেষ্টা, বিএফআইইউয়ের প্রধান), এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশন, ক্রীড়া সংস্থা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়মুক্ত করার অংশ হিসেবে পদোন্নতি, পদায়ন, বাধ্যতামূলক অবসর, চুক্তিতে নিয়োগ বাতিল ঘোষণা এবং চুক্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে ব্যাপক প্রশাসনিক রদবদল করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২, বিসিএস পরীক্ষায় একজন প্রার্থীর সর্বোচ্চ চারবার অবতীর্ণ হতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একদিকে পিএসসি থেকে নিয়োগের সুপারিশ পেয়েও বিগত সরকারের সময়ে চাকরি না পাওয়া ২৫৯ চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও ৯৯ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত মোট ৩৬৯ জন উপপরিদর্শককে (এসআই) শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিতর্কিতভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া ছয়টি বিসিএস ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া চলমান।
সরকারের এসব কার্যক্রম তুলে ধরে টিআইবি বলছে- রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া বা না দেওয়ার চর্চা এখনও অব্যাহত রয়েছে। দেখা যাচ্ছে কোথাও কোথাও পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করা হয়েছে। নিয়োগে বিপরীতধর্মী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতার ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি