ঘূর্ণিঝড় সেইভাবে বাংলাদেশের ওপর আঘাত হানবে না: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এখন যে পথ ধরে এগোচ্ছে, গতিপথ একই রকম থাকলে বাংলাদেশের ক্ষতির ঝুঁকি কম হবে বলেই আশা করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
তিনি বলেছেন, উত্তর-পশ্চিম অংশে সরাসরি ওড়িশার দিকে এর গতিপথ। যদি এই গতিপথ একই রকম থাকে তবে বাংলাদেশে উপকূলে ক্ষতির কোনো প্রভাব হবে না বলে আমরা আশা করছি।
সোমবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি বিষয়ক এক সভা শেষে তিনি বলেন, “আল্লাহ এখনও আমাদের অনেকটা টেনশনমুক্ত রেখেছেন। নিম্নচাপটি সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এটি এখনও অতটা শক্তিশালী হতে পারেনি।”
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশা উপকূল থেকে ৫০০ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “উত্তর-পশ্চিম অংশে সরাসরি ওড়িশার দিকে এর গতিপথ। যদি এই গতিপথ একই রকম থাকে তবে বাংলাদেশে উপকূলে ক্ষতির কোনো প্রভাব হবে না বলে আমরা আশা করছি।
“ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ সেইভাবে বাংলাদেশের ওপর আঘাত হানবে না। বাংলাদেশের ওপর দিয়ে হয়ত মেঘ ও ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে।”
ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এখন ঘণ্টায় ২ কিলোমিটার গতিতে এগোচ্ছে। এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে সোমবারই প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং পরের ২৪ ঘণ্টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরের বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তর উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে বুধবার প্রথম প্রহরে ওড়িশার উত্তর উপকূল এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। বুধবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গের পারাদ্বীপ ও সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে মনে করছেন ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সবই কঠিন পর্যবেক্ষণে রেখেছি। উপকূলে না উঠে আসা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখব। যদি কোনো কারণে এটা দিক পরিবর্তন করে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে আসে তবে, আমরা যেন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে।”
স্বেচ্ছাসেবক থেকে মাঠপ্রশাসন- সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিপদ সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে।
“আমরা মনে করি, ইনশাল্লাহ, আল্লাহ যেভাবে আমাদের বাংলাদেশের প্রতি রহমত করেছেন, দয়া করেছেন, সেটা অব্যাহত থাকলে এবার হয়ত ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারব।”
ঝড়ের পরিস্থিতি প্রতি ৪ বা ৬ ঘণ্টা পর পর মনিটর করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যদি গতিবেগ আরও বাড়ে, তারপরে আমরা ঘণ্টায় ঘণ্টায় সংবাদ দিতে পারব। আপনারা সে সব সংবাদ পরিবেশন করবেন, যাতে জনগণ কোনো রকম ভুল বা ঢিলেমি করার সুযোগ না পায়।”
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি