বাংলাদেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্টমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
বাইডেন প্রশাসন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন দেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, সিএনএন টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোমেন তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। খবর বিবিসি।
সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “বাংলাদেশের জন্য এটা খুবই সুখবর, কারণ বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা কেনার জন্য চুক্তি সম্পাদন করেছিল। কিন্তু সেরাম এ পর্যন্ত মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে সরবরাহ করেছে এবং উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩২ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন।”
আবদুল মোমেন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বাংলাদেশে যেসব মানুষ এই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, টিকার অভাবে তাদের একটা বড় অংশ দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছেন না।”
“এটা আমাদের জন্য বড়ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে” বলেন মোমেন।
তিনি বলেন, “আমরা যখন অন্য জায়গা থেকে ভ্যাকসিন পাবার চেষ্টা করছি, তখন আমেরিকার অন্য দেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেয়ার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার খবর আমরা শুনেছি।”
মন্ত্রী বলেন, “আমরা আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে টিকা চেয়ে চিঠি লিখেছি।”
তিনি বলেন, “আমেরিকা বাংলাদেশকে কিছু ডোজ টিকা দিতে রাজি হয়েছে।”
“তবে সমস্যা হল এফডিএ (আমেরিকার খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন) এই অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের রপ্তানি অনুমোদন করতে অনেক সময় নিচ্ছে।” বলেন এ কে আবদুল মোমেন।
তবে যেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যাকসিন ইতোমধ্যেই অনুমোদন করেছে, তাই এফডিএ এটি অনুমোদন না করলেও, যুক্তরাষ্ট্র যদি টিকার চালান পাঠাতে রাজি হয়, বাংলাদেশ অবিলম্বে তা নিতে রাজি আছে বলে সিএনএন নিউজ চ্যানেলকে দেয়া লাইভ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা শিবিরে কোভিড পরিস্থিতি
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার যে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, সে বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে মোমেন স্বীকার করেন যে তাদের যেহেতু এখনও টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি, তাই সরকার শিবিরগুলোতে খুবই কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
“এ কারণে শিবিরগুলোতে মৃত্যু এবং সংক্রমণের হার খুবই কম। বস্তুত আমাদের নেয়া ব্যবস্থার কারণে শিবিরগুলোতে করোনাভাইরাসে একজনও মারা যায়নি। আমরা তাদেরও টিকা দিতে চাই,” মোমেন বলেন।
তিনি বলেন, “প্রতিবেশী দেশ ভারতে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাবার পর এবং সেখানে নতুন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মানুষের আসা ঠেকানো সম্ভব হয়নি।”
“যেসব বাংলাদেশি ভারতে গিয়েছিলেন তাদের অনেকেই এখন ফিরছেন। তাদের মাধ্যমে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ঢোকার আশংকা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করেছি।”
“আমাদের এখন আরও টিকার প্রয়োজন। সেটা খুবই জরুরি।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ঘনবসতির দেশ। তাই কোভিড যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তার জন্য সরকার খুবই সচেষ্ট আছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ