News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ১৮ মে ২০২১
আপডেট: ১১:১৪, ১৮ মে ২০২১

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা

সচিবালয় বিটে কর্মরত প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের নামে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শিব্বির আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। শাহবাগ থানার ১৬ নম্বর এই মামলায় রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতারও দেখিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।

সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের মামলার তথ্য নিশ্চিত করেন।

এডিসি হারুন বলেন, “দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারা অনুযায়ী রোজিনা ইসলামের নামে মামলা করেছেন উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হবে।”

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মহোদয়ের একান্ত সচিবের দফতরে প্রবেশ করেন রোজিনা ইসলাম। এ সময় একান্ত সচিব দাফতরিক কাজে সচিব মহোদয়ের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। রোজিনা ইসলাম দাফতরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকান এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন। এ সময় সচিব মহোদয়ের দফতরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. মিজানুর রহমান খান বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাকে বাধা দেন এবং তিনি নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে কক্ষে কী করছেন, তা জানতে চান।

অভিযোগে বলা হয়েছে, এসময় রোজিনা ইসলাম নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, উপসচিব জাকিয়া পারভীন, সিনিয়র সহকারী সচিব শারমীন সুলতানা, সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা, সিনিয়র সহকারী সচিব মোসাদ্দেক মেহদী ইমাম, অফিস সহায়ক মো. মাহফুজুল ইসলাম, সোহরাব হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্টাফরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টসের ছবি সম্বলিত মোবাইল উদ্ধার করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, বর্ণিত ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে ডকুমেন্টসগুলো রোজিনা ইসলাম চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে শাহবাগ থানার মহিলা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে জিম্মায় নেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন কেনা সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এ সংক্রান্ত খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট প্রণয়ন কাজও চলছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে প্রতিনিয়ত চিঠি ও ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে। রোজিনা ইসলাম এ ধরনের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের ছবি তুলছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।

এর আগে, প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাকে সেখানে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেও তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে, সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এসময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করে তার মুক্তি দাবি করেন।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি চেয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়