`আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল আনসার আল ইসলাম`
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে হামলার পরিকল্পনা করেছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের একটি গ্রুপ। এজন্য তারা ধারালো অস্ত্রও সংগ্রহ করেছিল।
এছাড়া তারা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরক প্রস্ততের চেষ্টা করেছিল। এই গ্রুপের চার সদস্যকে শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- মো. জসিমুল ইসলাম ওরফে জ্যাক, মো. আব্দুল মুকিত, মো. আমিনুল হক ও সজীব ইখতিয়ার। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ব্যাগ, একটি চাপাতি, ২টি ল্যাপটপ ও ৫টি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো: আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের গ্রেফতার সদস্যরা ঢাকা ও সিলেটে পুলিশ ও বিজিবির টহল টিমে হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এ চক্রের বাকি দুই সদস্য হিজরতের উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে আফগানিস্তান চলে গিয়েছে। গ্রেফতার এই চার জনেরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার পর কথিত হিজরতের মাধ্যমে আফগানিস্তান পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।’
সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো.আসাদুজ্জামান বলেন, আনসার আল ইসলামের গ্রেফতার সদস্যরা নিষিদ্ধ সংগঠনের আদর্শ বাস্তবতায়নের লক্ষ্যে অনলাইনে টেলিগ্রাম অ্যাপসে সায়েন্স প্রজেক্টের নামে তৈরি অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরক প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা ডিভাইস পর্যালোচনা করে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানায়, তারা সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নাশকতামূলক কর্মকান্ড সম্পাদনের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোহাম্মদপুরে এসে একত্রিত হয়। আনসার আল ইসলামের দায়িত্বশীল বা মাসুল ফরিদ ওরফে তারিক আব্দুল্লাহর সহযোগিতায় সামাজিক যোগাযোগ অ্যাপস গ্রুপ ও অনলাইনে গোপনীয় টেক্সট নামের সিক্রেট চ্যাটিং অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতো।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান আরও বলেন, সম্প্রতি গ্রেফতারকৃতরা সংগঠনের দায়িত্বশীলদের নির্দেশে সিলেটের কোতোয়ালি থানা এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে হোটেল ম্যানেজারকে আহত করে পালিয়ে যায়।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, তাদের পরিকল্পনা ছিল গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো। এই বিষয়টি তাদের পরিকল্পনা পর্যায়ে ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসর কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মো. জসিমুল হক বেসরকারি অতীশ দীপংকর ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র, মো. আব্দুল মুকিত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার মারকাজুস সুন্নাহ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন, মো. আমিনুল হক সিলেটের আল হিদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র এবং মো. সজীব ইখতিয়ার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস