বিমানের বিশেষ ফ্লাইট বাতিল, সৌদিগামী অভিবাসীদের বিক্ষোভ
বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে নিয়ে যেতে বিমান বাংলাদেশের সৌদি আরবগামী একটি বিশেষ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ অভিবাসী শ্রমিক।
বিমান বাংলাদেশের ‘বিজি-৫০৯৩’ ফ্লাইটটি শনিবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু, সৌদি আরবের কাছ থেকে অবতরণের অনুমতি না পাওয়ায় ফ্লাইটটি বাতিল করতে হয়েছে বলে জানিয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র।
ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছে যায় প্রায় ৩০০ যাত্রী। পরে আজ ভোররাত ২টার দিকে বিমান ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট বাতিলের কথা জানালে যাত্রীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ অবতরণ অনুমতি বাতিল করায় বিমানের এই ফ্লাইটটি বাতিল করতে হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, “যাত্রীদেরকে শহরের একটি হোটেলে নিয়ে রাখা হবে এবং পরবর্তী যে ফ্লাইট যাবে, সেটিতেই তাদের গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হবে।”
বিমান সূত্র জানায়, বাতিল হওয়া ফ্লাইটটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৩১৪ জন অভিবাসী শ্রমিকের যাওয়ার কথা ছিল।
বেশ কয়েকজন অভিবাসী শ্রমিক গণমাধ্যমকে জানান, দেশব্যাপী লকডাউন চলায় বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতেই তাদেরকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অথচ ফ্লাইট বাতিলের বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে একেবারে শেষ মুহূর্তে।
তারা জানান, বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট বাতিলের বিষয়টি আগে জানালে তাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
বিমান সূত্র আরও জানায়, আজকে সৌদি আরবে বিমানের আরও কিছু ফ্লাইট যাওয়ার কথা ছিলে এবং সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের নিজ নিজ কর্মস্থলে পৌঁছানোর সুবিধার্থে শনিবার থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহে সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে প্রায় ১০০টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত রয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গত ১৫ এপ্রিল এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গত ১১ এপ্রিল বেবিচক জানায়, ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন চলাকালীন সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে।
পরে গত ১৫ এপ্রিল এক আন্তঃমন্ত্রলায় বৈঠকে শনিবার থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহে সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে প্রায় ১০০টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী কঠোর লকডাউনের কারণে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার অভিবাসী শ্রমিকদের তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরার সুযোগ করে দিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ