সাংবাদিক নুরুল কবিরকে হয়রানি, তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
সাংবাদিক নুরুল কবির ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবীণ সাংবাদিক এবং নিউ এজ পত্রিকার নুরুল কবির হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়, অন্তবর্তী সরকার দেশে কোনো সাংবাদিক হয়রানির ঘটনা বরদাশত করবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার কোনো সাংবাদিকের প্রতি হয়রানির ঘটনা সহ্য করবে না। নুরুল কবির দেশের একজন সম্মানিত সম্পাদক এবং সাংবাদিকতার ন্যায়পরায়ণতার জন্য সুপরিচিত। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি যুক্তি ও সততার প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নুরুল কবির দেশের গণমাধ্যম জগতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং ন্যায়পরায়ণ সাংবাদিকতার জন্য লড়াই করে আসছেন।
ইংরেজি দৈনিক নিউজ এজ এর সম্পাদক নুরুল কবির ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হন। শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নুরুল কবির ফেসবুকে লিখেছেন, চলতি সপ্তাহে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে হয়রানি করে। ফেরার পথে আবারও একই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হন।
তিনি লিখেছেন, দুই দশকের বেশি সময় ধরে যতবার বিদেশে গিয়েছি, প্রতিবারই ঢাকার বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আমাকে হয়রানি করেছে। বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। কখনো গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আমার পাসপোর্ট নিয়ে গেছেন, নথিপত্রে সব তথ্য থাকার পরও কেন বিদেশে যাচ্ছি, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে, আমার পাসপোর্টের পৃষ্ঠার ছবি তোলা হয়েছে, যা আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। অনেক সময় ফ্লাইট ছাড়ার কয়েক মিনিট আগে নথিপত্র ফেরত দেয়া হয়েছে। তবে দেশে ফেরার সময় এসব ঘটনার মুখোমুখি কখনো হতে হয়নি।
সম্প্রতি হওয়া ঘটনায় তিনি উল্লেখ করেন, ১৮ নভেম্বর শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে অনুষ্ঠিত এশিয়া মিডিয়া ফোরামে যোগ দিতে বিদেশে যাওয়ার সময় আবারও হয়রানির শিকার হন। তিনি আশা করেছিলেন এবার হয়রানির দিন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। যাওয়ার সময় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে, আর ২২ নভেম্বর ফেরার সময় আবারও এক ঘণ্টা অপেক্ষা করা হয়।
তিনি লেখেন, দেশপ্রেমিক হওয়াটা যেন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহের কারণ।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক নূরুল কবির ১৮ নভেম্বর শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলেন এবং ২২ নভেম্বর দেশে ফেরেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি