২ প্রকল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়ন ও দরিদ্রদের জীবিকা নির্বাহে সহায়তা করতে বাংলাদেশকে দুটি প্রকল্পে ৬০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটনের হেড অফিস এই অর্থের অনুমোদন দেয়। শুক্রবার (২১ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস।
বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, যুব, মহিলা ও সুবিধাবঞ্চিত কর্মীদের কর্মসংস্থান এবং জীবিকার সুযোগ উন্নত করতে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। বিশ্বব্যাংকের এই অর্থের মাধ্যমে প্রায় ১৭ লাখ ৫০ হাজার দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা হবে। এই লক্ষ্যে দেশের দুটি প্রকল্পে ৬০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে। এ অর্থ কোভিড-১৯ মহামারির বর্তমানসহ ভবিষ্যৎ ধাক্কা সামলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক দনদন চেন বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারিতে হাজার হাজার মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে মহিলা শ্রমিক, যুবক এবং প্রবাস থেকে ফেরত আসা জনগোষ্ঠীদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করেছে। এই দুটি প্রকল্প গ্রামীণ দরিদ্র জনগণকে ক্ষমতায়ন ও সংহত করতে, ভবিষ্যতের চাকরির জন্য তাদের প্রস্তুত করবে। বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ‘ত্বরণ এবং দক্ষতা শক্তিশালীকরণ মাধ্যমে অর্থনৈতিক রূপান্তরকরণ (এএসএসইটি)’ শীর্ষক প্রকল্পে ৩০ কোটি বা ৩০০ মিলিয় ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা পাচ্ছে বিশ্বব্যাংক থেকে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লাখেরও বেশি যুবক এবং শ্রমিকদের ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। বিশেষ করে এ প্রকল্পে যুব, মহিলা এবং সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তা করা হবে। প্রকল্পটি মহামারির সময় এবং তার পরে শ্রমিকদের পুনরায় প্রশিক্ষণ দিতে এবং এভাবে অর্থনৈতিক গতি পুনরুদ্ধারের শিল্পগুলোকে সহায়তা করবে।
এছাড়া ‘রেসিলিয়েন্স, এন্টারপ্রেনারশিপ এবং লাইভলিভ ইমপ্রুভমেন্ট (আরইএলআই)’ প্রকল্পে ৩০ কোটি বা ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। প্রকল্পটির মাধ্যমে ২০টি জেলার ৩ হাজার ২০০ গ্রামের ৭ লাখ ৫০ হাজার দরিদ্র ও দুর্বল গ্রামীণ মানুষের জীবন-জীবিকা উন্নয়নে সহায়তা হবে।
এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের টিম লিডার জ্যান সেন্ট-জিউর্স বলেন, প্রকল্পটি গ্রামীণ দরিদ্র জনগণকে জরুরিভিত্তিতে কোভিড-১৯ মহামারির ভবিষ্যৎ ধাক্কা মোকাবিলায় তাদের দক্ষতা উন্নয়ন করবে। এছাড়া আয়-উৎপাদনমূলক কার্যক্রম এবং দক্ষতা বিকাশের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করতে, তাদের সক্ষমতা তৈরিতে এবং সঞ্চয় এবং ক্ষুদ্র ঋণের জন্য কমিউনিটি পরিকল্পনাগুলোর পাশাপাশি জলবায়ু-নির্ভরশীল অবকাঠামোকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। এই প্রকল্পে দরিদ্র ও অতি দরিদ্র, মহিলা এবং যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ডি