অন্তত ৬৫ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন
এবারের ঈদ যাত্রায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মোট মুঠোফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখে। দেশের একটি মোবাইল অপারেটর তাদের তথ্যভান্ডার ও কল প্রবণতা বিশ্লেষণ করে এ হিসাব জানিয়েছে। সংখ্যাটি ‘ইউনিক ইউজার’ ধরে হিসাব করা। এর মানে হলো, এক ব্যক্তির একাধিক সিম থাকলেও তাঁকে একজন গ্রাহক হিসেবেই গণ্য করা হয়েছে।
একই অপারেটর গত সোমবার জানিয়েছিল, ওই দিন বিকেল পর্যন্ত ২৫ থেকে ২৮ লাখ মুঠোফোন ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছেন। আর বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৬৫ লাখ মানুষের ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার হিসাব দিয়েছে তারা।
মুঠোফোনের সিম ব্যবহার ধরে তৈরি করা এই হিসাবের আওতায় মুঠোফোন ব্যবহার করেন না, এমন মানুষ ও শিশুরা আসেনি। এক ব্যক্তির একাধিক মুঠোফোন থাকতে পারে। সেটিও এই হিসাবে বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে এই হিসাব থেকে ঢাকা ত্যাগ করা মানুষের সংখ্যা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়।
এবার ঢাকা ছাড়া মুঠোফোন গ্রাহকের সংখ্যাটি গত বছর করোনা ঠেকাতে দেওয়া সাধারণ ছুটির সময়কার তুলনায় কম। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত বছর ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ১ কোটি ১০ লাখ মুঠোফোন ব্যবহারকারী ঢাকা ছেড়েছিলেন। ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন।
ঢাকায় কত মানুষ বাস করে, তার হালনাগাদ কোনো পরিসংখ্যান নেই। ২০১৬ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) হিসাবে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ। এ জনসংখ্যার একটি বড় অংশ পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় গ্রামে যায়।
এর আগে গতকাল বুধবার ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ৪ থেকে ১১ এপ্রিলের একটি হিসাব তুলে ধরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি লেখেন, করোনার সামনের দিনের সম্ভাব্য ভয়ংকরতার কিছু তথ্য তুলে ধরছি। গত ৪ থেকে ১১ মে ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে গেছে ৬০ লাখ ৭২ হাজার ১৭৮ জন। এর মাঝে গ্রামীণের সিম ব্যবহারকারী ৪৯ লাখ ২৪ হাজার ৯৯২। রবির সিম ব্যবহারকারী ৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৩, বাংলালিংকের সিম ব্যবহারকারী ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯১৩ এবং টেলিটক সিম ব্যবহারকারী ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮০৩ জন।
মন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘ওরাতো সবাই ফিরবে। আমরা জানি না, কতটা নিরাপত্তাসহ তারা ফিরবে, কতজন করোনা বহন করে আনবে অথবা কতজন করোনা ঢাকা থেকে বহন করে নিয়ে গেছে।’
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধের মধ্যে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ ও ট্রেন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সড়কে বিপুল পরিমাণ যানবাহন চলাচল করছে। মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে মানুষ যাচ্ছে গন্তব্যে। ঈদের আগের দিন আজ বিকেল পর্যন্ত ঘাটে মানুষের ভিড় ছিল।
এদিকে করোনা মহামারির এই সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপারে রেকর্ড হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৬৭৭টি যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার করেছে। উদ্বোধনের পর ২৩ বছরের মধ্যে এ বছরই সেতু দিয়ে সর্বোচ্চসংখ্যক যানবাহন পারাপার হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস