মহামারীতে কম আয় নিয়েও সন্তুষ্ট ৮৬ শতাংশ মানুষ: সিপিডি
মহামারীর কারণে এক বছরে মানুষের আয় কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ। তবুও এই আয় নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন ৮৬ শতাংশ মানুষ। এ তথ্য উঠে এসেছে সিপিডির এক জরিপে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির এই জরিপে আরও দেখা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় এই বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৫০ শতাংশ মানুষ তাদের সঞ্চয় কমিয়েছেন। এই সময়ে মানুষের আয় কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ; তবুও আয় নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন ৮৬ শতাংশ।
বুধবার গবেষণার তথ্য উপস্থাপনাকালে সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান জানান, মহামারীর শুরুর প্রথম দিকে এপ্রিল-মে মাসে যারা চাকরি হারিয়েছিলেন, তাদের বেশিরভাগই এক মাস পর চাকরি পেয়েছেন।
‘কোভিডকালে আয় ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতি: কীভাবে মানুষগুলো টিকে আছে’’ শীর্ষ এই জরিপ এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের ১৪ জেলার ২ হাজার ৬০০ লোকের বাড়িতে গিয়ে পরিচালনা করা হয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফাম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এতে সহযোগিতা করে।
বুধবার এই জরিপের ফলাফল প্রকাশের ভাচুর্য়াল অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে আগামী বাজেটে স্বল্প ও মাঝারি আয়ের মানুষের কাছে প্রণোদনার অর্থ পৌঁছানোর পরামর্শ দিয়ে একটি মধ্য মেয়াদী ‘শোভন’ কর্মসংস্থান তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
সিপিডি‘র সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানীয় বক্তা হিসেবে সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, “অনেকগুলো বেসরকারি সংস্থা দেশের প্রয়োজনে বিশেষ সময়ে অনেক পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এসব পরামর্শ কী সরকার শোনে, নাকি তাদের মতো করে চালাচ্ছেন।“
তিনি দেশের উন্নয়নে বাস্তবভিত্তিক ও মাঠ থেকে উঠে আসা এসব জরিপের ফলাফলে আমলে নিয়ে সুধীজন ও বিশ্লেষকদের পরামর্শ গ্রহণ করে সরকারি কর্মসূচী নেওয়ার পরামর্শ দেন।
আগামী বাজেটে তিনি সব খাতের স্বল্প আয়ের মানুষকে কেন্দ্র করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) আওতায় আয়বর্ধক কর্মসূচী নেওয়ার তাগিদও দেন।
সম্মানিত অতিথির ব্ক্তব্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক তত্তাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা তপন চৌধুরী বলেন, “দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা না গেলেও এটা নিশ্চিত যে প্রথম ঢেউয়ের ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা গেছে।
“অন্যদের কথা বলতে পারব না, তবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের বিপুল চাহিদা দেখেছি। গত দুই বছর ধরে আমরা বিপুল সম্প্রসারনে গিয়েছি। কর্মসংস্থানও বাড়ছে।”
এখন অন্যান্য খাতেও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ হলে কর্মসংস্থান বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সিপিডি‘র সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রবৃদ্ধির চেয়ে মানুষের হাতে অর্থ পৌছানোর ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “এতে অর্থনীতি অনেক বেশি অন্তর্ভূক্তিমুলক হবে।“
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি