News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২০ এপ্রিল ২০২১
আপডেট: ০৯:১১, ২০ এপ্রিল ২০২১

মুভমেন্ট পাসের নামে চিকিৎসকদের হেনস্থা করা হচ্ছে: স্বাচিপ

মুভমেন্ট পাসের নামে চিকিৎসকদের হেনস্থা করা হচ্ছে: স্বাচিপ

দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪ এপ্রিল থেকে চলছে সরকারি বিধিনিষেধ। এই সরকারি বিধিনিষেধ চলাকালে ১৮ এপ্রিল চিকিৎসক-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগবিতণ্ডায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনিকে হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়েছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)।

প্রতিবাদ লিপিতে মুভমেন্ট পাসের নামে চিকিৎসকদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে জানায় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)। সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা মনে করছে, এটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে চিকিৎসক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপকৌশল। একই সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে চিকিৎসক সমাজ ও পুলিশ বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর হীন প্রচেষ্টা।

সোমবার স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান সংকটজনক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ও নেতৃত্বে দেশের চিকিৎসকরা যখন সম্মুখ সারিতে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে কোভিড মোকাবিলায় নিবেদিত, তখন নিজ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের মাধ্যমে একজন সিনিয়র নারী চিকিৎসককে অযাচিতভাবে অপমানজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি করে হেনস্তা করা হয়েছে।

১৮ এপ্রিল দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একদল পুলিশ সদস্য গাড়ি থামিয়ে তার কাছে মুভমেন্ট পাস দাবি করেন। এ সময় গাড়ির সামনে লাগানো বিএসএমএমইউয়ের লোগো সম্বলিত স্টিকার এবং বিএসএমএমইউ পরিচালক কর্তৃক সম্মুখ সারির স্বাস্থ্যকর্মী চলাচলসংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র এবং বিএসএমএমইউয়ের লোগোসহ চিকিৎসকের নামাঙ্কিত অ্যাপ্রোন প্রদর্শন করে নিজের পরিচয় দেন। কিন্তু সব কিছুকেই ভুয়া উল্লেখ করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা অন্যায়ভাবে তার কাছে মুভমেন্ট পাস দাবি করেন ও অশোভন আচরণ করেন।

পুরো ঘটনাটি উদ্দেশ্যমূলক, চিকিৎসক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপকৌশল এবং দেশের চিকিৎসক সমাজ ও পুলিশ বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার একটি হীন প্রচেষ্টা বলে আমরা মনে করে স্বাচিপ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনার চলমান দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন কর্মসূচির প্রথম দিনেও দেশের বেশ কিছু জায়গায় কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে চিকিৎসকদের বাধা ও নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চিকিৎসকদের কর্মস্থলে যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার দাবি জানালে পুলিশ প্রশাসন গণমাধ্যমে ‘চিকিৎসকদের যাতায়াতে কোনো মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন হবে না’ মর্মে বিবৃতি দেয়। এরপরও রোববার এলিফ্যান্ট রোডে দেশের একজন সিনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে যে ভাষায় মুভমেন্ট পাস দাবি করা হয়েছে তা কোনো বিবেচনায়ই গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

এতে আরও বলা হয়, লকডাউন চলাকালে রাস্তায় কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে যারা রাষ্ট্রের জরুরি সেবা দানে নিয়োজিত ও আত্মনিবেদিত তাদের মুভমেন্টে সাহায্য করা। তাদের কাজ সহজতর ও নিরাপদ করা। কিন্তু গুটিকয়েক পুলিশ সদস্য তা না করে এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে হীন মানসিকতা প্রদর্শন করছেন। যা পুরো বাহিনীর ভূমিকা ও আচরণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

উল্লেখ্য, সরকারি বিধিনিষেধ চলার পঞ্চম দিনে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে চলা ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আইডি কার্ড প্রদর্শন ও মুভমেন্ট পাস নিয়ে বাকবিতন্ডার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ দিন ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের চেকে পড়েন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি। সেখানে ঢাকা জেলা প্রশাসন অফিসের সহকারী কমিশনার শেখ মো. মামুনুর রশিদ আদালত পরিচালনা করছিলেন। নিউ মার্কেট থানার একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে একাধিক পুলিশ সদস্য সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে নানারকম আলোচনা ও সমালোচনা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়