স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবার অপেক্ষায়
করোনা পজেটিভ হয়ে টানা ২০ দিন ঘরবন্দী। তীব্র শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ আর নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ নুয়ে পড়া শরীরের সাথে। একই বাসায় বসবাস অথচ মেয়ের শরীরের গন্ধটাও মেলে না। চিকিৎসক পরামর্শ দিলেন, হাসপাতালে ভর্তি হতে। কিন্তু বাসায় থেকে পুরোটা সময় যুদ্ধ চালিয়ে গেছি। ভয়ংকর এ দিনগুলোর কথা হয়তো কোন একদিন মলাটবদ্ধ করবো, লিখবো । আজ ২০ দিন পর একটা সকাল এলো যখন বাইরে বের হলাম তখন দেখলাম, এ শহর, পথ-পথিক সবই চলছে নিজের গতিতে, কেবল এগুতে পারছিনা আমি। দ্বিতীয় টেস্টর রিপোর্ট হয়তো নেগেটিভ আসবে কিন্তু স্বাভাবিক জীবন যে কবে ফিরে পাবো সেটিই এখন দেখার অপেক্ষায়!! যদিও মনের দিক থেকে শতভাগ ভাল আছি।
করোনায় আক্রান্ত না হলে ব্যস্ত এ জীবনে হয়তো বুঝবার ফুরসতই মিলতো না যে কতো মানুষ আমায় ভালোবাসে, স্নেহ করে, আপনজন ভাবেন। যাদের সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ এই ভেবে যে, আমার ভেতরে লড়াই করার আগ্রহটা জাগিয়ে তুলেছে, মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা৷
প্রতিদিন কতো ক্ষুদে বার্তা যে আসতো, ফোনে না একবার না পেয়ে, এতোটুকু বিরক্ত না হয়ে বারবার খবর নেবার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন।করোনার এই সময়ে পরিবার,কাছের মানুষ ছেড়ে চলে যাওয়ার সংবাদ যখন গণমাধ্যমে দেখি তখন পরিবারকেই সবচেয়ে পেয়েছি পাশে। শশুর-শাশুড়ি এতোটুকুও দ্বিধা করেননি,নিজের করোনা উপসর্গ থাকার পরও সারাক্ষণ সেবা দিয়ে গেছে Sanjib Milon, মা-দিদিভাই,বড়দি-মেজদির চোখের জল দেখেছি, একাত্তরের প্রতিটি সহকর্মীদের উৎকন্ঠা দেখেছি, খোঁজ খবর নিয়েছেন তারা,বিটের বর্তমান ও সাবেক সহকর্মী বড়ভাই-আপা-জুনিয়রদের পাশে দাঁড়ানোর মনোভাব দেখেছি। পাশে থাকার সাহস যুগিয়েছেন অনেক প্রিয় মুখ যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত, আমার কাছের, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বন্ধু খবর নিয়েছে, ভরসা দিয়েছে।
এতো এতো ভালবাসা যা সামনের দিনগুলোকে ভীষণ রকম বাঁচবার তাগাদা জোগাবে আমায়। সুস্থ হয়ে উঠলে এখন একটাই প্রত্যাশা, করোনা সংক্রমণ যাদের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ছে তাদের পাশে থাকবো, প্লাজমা দেবো। অসংখ্য ধন্যবাদ বাবু ভাই, Shakil Ahmed Kazi Azizul Islam Shahidul Islam Ripon Sujon Kabir Bayezid Milky বসদের যারা সব সময় পাশে থেকেছেন। পাশে থাকা মানুষগুলোর তালিকা এতো এতো বড় যে ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানালেও শেষ হবে না তাই আর নাম উল্লেখ করলাম না। এটা নিয়ে বিস্তারিত আরেকদিন লেখবো।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএজেড/এএস