শিশুর মানসিক ও সামাজিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ৭ টিপস
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সুন্দর ঘর, পরিবেশ, পোশাক আর পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রীর ব্যবস্থা থাকলেই শিশুর মানসিক ও সামাজিক বিকাশ ঘটে না। এ জন্য প্রয়োজন শিশুকে আশপাশের পরিবেশ ও শিশুদের সাথে মিশতে দেয়া। আত্নীয় পরিজন ও সামাজিক আনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের ব্যবস্থা করা। কারণ শিশুর ভেতর লুকিয়ে থাকে আগামীর সম্ভাবনা। সেই আগামীর জন্যই প্রয়োজন শিশুর সঠিক পরিচর্যা, সঠিক শিক্ষা। শিক্ষার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো তার সামাজিক বোধ তৈরি করা। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে অভিভাবকের।
চলুন জেনে নেই শিশুদের মানসিক ও সমাজিক বিকাশ ঘটাতে যেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে-
এক.
শিশুর বয়স যখন এক বছর হয়, তখন সে বাবা, মা ছাড়াও বাড়ির মানুষদের চিনতে শেখে। দুই বছর হলে সে অন্যদের সঙ্গে খেলতেও পারে। কিন্তু তখনো তার জগৎ থাকে বাড়িতেই। তবে এরপর আস্তে আস্তে সে ক্রমশ পরিবেশ চিনতে শেখে। তিন থেকে চার বছরের শিশু অন্য শিশুদের সঙ্গে মিশতে শেখে, খেলতে শেখে। আরও একটু বড় হলে তার চেনার পরিসর বেড়ে যায়। শিশু কী চাইছে, কী বলতে চাইছে, অভিভাবককে বুঝতে হবে। বিভিন্ন ধরনের খেলার মধ্য দিয়ে তার মানসিক বিকাশ ঘটে। যে ধরনের খেলায় তার বৌদ্ধিক বিকাশ হবে, সেই ধরনের খেলায় তাকে উৎসাহী করতে হবে।
দুই.
তিন-চার বছরের শিশু কথা বলতে শিখে যায়। এই বয়সে পার্কে তাকে খেলতে নিয়ে গেলে সে আর পাঁচটা শিশুর সঙ্গে খেলতে, কথা বলতে শিখবে। খেলা, রাগ, ঝগড়া, সবকিছুর মাধ্যমেই তার মধ্যে সমাজ, বন্ধু সম্পর্কে ক্রমশ ধারণা তৈরি হবে। কথা বলা, খেলা, অন্যের সঙ্গে মেশা, এসবের মধ্য দিয়ে স্বাভাবিকভাবে তার মধ্যে সামাজিক সত্তার বিকাশ ঘটবে।
তিন.
কোন কথায় কাউকে ধন্যবাদ বলতে হয়, কোন কথায় দুঃখপ্রকাশ করতে হয়, খুদে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই শিক্ষাও দিতে হবে। বাইরে কোথাও সে খারাপ আচরণ করলে বকাবকি না করে তাকে বুঝিয়ে দিন, কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক।
চার.
ছোটদের মধ্যে ঝগড়া-ভাব হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি দেখা যায়, খেলায় হেরে গিয়ে সে কান্নাকাটি করছে আর খেলতে যেতে চাইছে না, তবে তাকে কিন্তু বোঝাতে হবে। খেলা মানে সেখানে হার-জিত দুটোই থাকবে। হার মানে ছেড়ে দেওয়া নয়, আবার খেললে সে জিতবে, সেই মনের জোর তাকে দিতে হবে।
পাঁচ
শিশুরা কী করছে, কীভাবে অন্যের সঙ্গে কথা বলছে, কেউ তাকে খারাপ কথা বলছে কি না, সে ব্যাপারে অভিভাবককে নজর রাখতে হবে। তবে সেটা দূর থেকে। শিশুদের মধ্যে যে ছেলেমানুষি ঝগড়া, অভিমান চলে, তার ভেতরে কিন্তু ঢুকতে যাবেন না। বরং খেয়াল করুন, আপনার সন্তান কীভাবে সেই পরিস্থিতি সামলাচ্ছে। প্রয়োজনে তার পাশে থাকুন, তবে সিদ্ধান্ত খুদেকেই নিতে দিন।
ছয়.
খুদেকে গল্প শোনান। রূপকথা থেকে নীতিকথার গল্প। ছোট ছোট গল্প বলে তাকে বোঝান, এই গল্প থেকে কী শেখা যায়। এভাবেই খেলার ছলে সে ঠিক, ভুল, কোনটা করা উচিত, কোনটা নয়, বুঝতে শিখবে। এই শেখা তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য খুব জরুরি।
৭.
সমাজে চলতে গেলে সবার সঙ্গে মিলেমিশে চলতে হয়। নিজের জিনিস বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়। ছোট থেকে সেটা না শেখালে সন্তানের মধ্যে অজান্তেই স্বার্থপর মনোভাব তৈরি হতে পারে। কোনো কিছু ভাগ করে নিতে না চাইলে বকাবকি না করে বোঝার চেষ্টা করুন, সে কী বলছে? তার পর তাকে বুঝিয়ে বলুন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি