শরীরে জোশ বাড়ায় বিট-গাজরের জুস
বিটের জুসকে বর্তমান সময়ে সুপার ফুড বা দারুণ উপকারী তরল খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এতে আছে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নানা উপাদান। অনেকে আবার পুষ্টিগুণ বাড়াতে বিটের জুসের সঙ্গে গাজরের জুস যুক্ত করেন। চমৎকার এই দুই জুস মিশিয়ে খেলে শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এতে রক্তচাপ কমে, শরীর বিষমুক্ত হয়। নানা রকম শারীরিক সমস্যা দূর হয়। এতে আছে নানা রকম পুষ্টি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। বিট ও গাজরের জুসের আরও কিছু গুণের কথা জেনে নিন:
১. বিট ও গাজরের জুসকে শরীরের অন্যতম বিষনাশক হিসেবে মনে করা হয়। বিটে বিটেইন নামের যে উপাদান থাকে, তা যকৃৎ ভালো রাখতে সাহায্য করে। গাজরের জুস শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গাজরের জুস মিরাকল হিসেবে কাজ করে। গাজরের মধ্যে থাকা পটাশিয়ামই এর মূল কারণ। গাজরে ক্যালরি ও সুগারের উপাদান খুবই কম। এ ছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যে সব ভিটামিন এবং খনিজের প্রয়োজন, তা-ও এতে বিদ্যমান। চর্বি কমাতে সাহায্য করে বলে ওজনও কমে। তাই চিকিৎসকেরা শরীরে পুষ্টির পরিমাণ বাড়াতে খাওয়ার আগে বা পরে এক গ্লাস গাজরের জুস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
২. প্রদাহনাশক হিসেবে এ জুস অত্যন্ত কার্যকর। এতে প্রদাহনাশক বিভিন্ন উপাদান ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি৬, এ, সি, নাইট্রেট আছে। শরীরকে সুস্থ রাখার নানা উপাদান থাকায় শীতের সবজি হিসেবে বিট খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নামক একটি উপাদানের অভাবে বয়সের ছাপ চলে আসে। গাজরের মধ্যে যে ক্যারটিনয়েড থাকে, তা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এ জুসের জুড়ি নেই। পরিপাকতন্ত্র সবল রাখতে নিয়মিত বিট ও গাজরের জুস খেতে পারেন। কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গাজরের জুস মিরাকল হিসেবে কাজ করে। গাজরের মধ্যে থাকা পটাশিয়ামই এর মূল কারণ। গাজরে ক্যালরি ও সুগারের উপাদান খুবই কম। এ ছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যেসব ভিটামিন ও খনিজের প্রয়োজন তা-ও এতে বিদ্যমান।
৪. বিটে প্রচুর নাইট্রেট থাকে, যা শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্কে অক্সিজেন বাড়ায় ও রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে। একটি সুস্থ হার্টের জন্য শারীরিকভাবে কর্মক্ষম থাকা, পর্যাপ্ত ঘুম ও চাপমুক্ত থাকাটা খুব দরকার। প্রয়োজন সঠিক খাদ্যতালিকার। গাজর ডায়েটরি ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ থাকে। এই উপাদানগুলো ধমনির ওপর কোনো কিছুর আস্তর জমতে না দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
৫. বিট ও গাজরে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন থাকে। তাই প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায় এ জুস থেকে। এতে চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। শরীরকে বিষমুক্ত করার উপাদান আছে বিটে। নিয়মিত বিটের জুস খেলে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা বিষাক্ত উপাদান দূর হয়ে শরীর পরিষ্কার হয়, ত্বক সুন্দর হয়। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে প্রতিদিন সকালে সতেজ বিটের জুস খেতে হবে।
৬. বিট ও গাজরের জুসে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা ত্বকের জন্য উপকারী। এ ছাড়া চুল পড়া ঠেকাতে পারে এ জুস। কেশের সুরক্ষার জন্য নানা উপাদান আছে বিটে। ত্বকের সজীবতা ধরে রাখতে নিয়মিত বিট খেতে পারেন। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রন হওয়ার প্রবণতা বেশি, তারা বেশি করে বিট খাবেন। প্রদাহবিরোধী উপাদান থাকায় বিটের জুস নিয়মিত খেলে মুখে ব্রনের সমস্যা দূর হয়।
৭. সতেজ থাকতে প্রাকৃতিক জুস হিসেবে খাওয়া যায় এ জুস। বিট কিন্তু নানাভাবে খাওয়া যায়। জুস ছাড়াও সালাদ ও স্যুপ হিসেবে, এমনকি রান্না করেও খাওয়া যায়। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি