করোনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো যত ভুল তথ্য
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যখন হিমশিম খাচ্ছে সবাই, ঠিক সেই মুহূর্তেও থেমে নেই গুজব ছড়ানো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবলীলায় ভুল তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র ছাড়াই এসব তথ্য দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ফলে এই মহামারিতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকছেই।
আসুন জেনে নেই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো সেইসব গুজব সম্পর্কে-
টিকা আবিষ্কার নিয়ে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে কোভিড-১৯ ঠেকানোর টিকা পাওয়া যাচ্ছে। এই তথ্য পুরোপুরি ভুল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কিছু ওয়েরবসাইটে কোভিড-১৯ এর টিকা আবিষ্কারের খবর পাওয়া যাচ্ছে যা একেবারেই ভুয়া। এ ধরনের গুজব জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি হতে পারে। কোভিড-১৯ এর টিকা আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। তবে টিকা তৈরি, পরীক্ষা এবং বিতরণ করতে আরো সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ফাইভ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক
আরেকটি গুজব হলো, ফাইভ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক করোনাভাইরাস ছড়ায়। শুধু তাই নয়, মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাহত করে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই। ফাইভ জি নেটওয়ার্ক মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাহত করার মতো শক্তিশালী নয়। অন্যদিকে, ফাইভ জি ভাইরাস ছড়াতে পারে এই তথ্য বৈজ্ঞানিকভাবেই অসম্ভব।
বাষ্প থেরাপি
একজন ডাক্তার নাক-মুখ দিয়ে বাষ্প গ্রহণ করে কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠেছেন এমন তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই তথ্যকে পুরোপুরি গুজব বলেই আখ্যা দিয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা বলেন, ঠাণ্ডাজনিত কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে ভাপ নিলে আরামবোধ হয়। গরম পানি দিয়ে ঘরের মেঝে পরিষ্কার করলেও জীবাণু সংক্রমণ থেকে কিছুটা রেহাই মেলে। তবে গরম পানির সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং অত্যধিক উত্তপ্ত বাষ্প শরীরে নেওয়ার চেষ্টা করলে তা হবে বিপদজ্জনক।
চামড়ার রং
মানুষের চামড়ার রং কোভিড-১৯ ঠেকাতে ভূমিকা রাখতে পারে, এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। আফ্রিকায় এমন গুজব ছড়িয়েছে যে, কালো চামড়ার মানুষদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয় না। চিকিৎসাবিদরা জোর দিয়ে বলেছেন, এক্ষেত্রে গায়ের রঙে কোনোকিছুই যায় আসে না। এটা সম্পষ্ট যে, কৃষ্ণাঙ্গরাও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো এইসব তথ্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত ভয়ংকর হতে পারে। তাই যেকোনো তথ্য দেখলেই তা সঠিক বলে ধরে নেওয়া যাবে না। মহামারির এই সময় নিরাপদ থাকতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রতি মুহূর্তে নানা আপডেট পাওয়া যাচ্ছে। প্রয়োজনে চোখ রাখুন সেই ওয়েবসাইটে।
সূত্র: বিবিসি
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ