শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল দুদক ও বিচার বিভাগ: আসিফ নজরুল
ছবি: সংগৃহীত
বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার দাসে পরিণত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
দুর্নীতির বিচার না হওয়ার সংস্কৃতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুর্নীতি যে একটা খারাপ জিনিস এটা ভাবার সংস্কৃতি আমাদের সমাজ থেকে চলে গেছে। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি ১০০ টাকার বালিশ নাকি চার হাজার, পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা দেখলাম ৬টা ব্যাংক লুটপাট হয়েছে। বাংলাদেশের একজন সাধারণ ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বড় লোক হয়ে গেছে। আমরা দেখলাম একটা বেহায়া প্রধানমন্ত্রী, তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এটা হাসতে হাসতে সে জাতির সামনে বলছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
গত ১৬ বছরে সরকারি-বেসরকারি খাতে দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল কিন্তু বিচার হয়নি। কিন্তু বিচার হয়েছে খালেদা জিয়ার।
বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলেও জানান এই উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল বলেন, খালেদা জিয়া ৩ কোটি টাকা এক জায়গায় রেখেছে প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে। একটা টাকা সেখান থেকে আত্মসাৎ করেনি। ৩ কোটি টাকা ৬ কোটি টাকা হয়েছে। ওই টাকা কেউ স্পর্শ করেনি। সেজন্য তিন বারের প্রধানমন্ত্রীকে ১০ বছরের জেল দিয়েছে এই দেশের দুদক, বিচার বিভাগ মিলে। আর সেই চোর প্রধানমন্ত্রী, যার পুরো পরিবার ছিল চোর সে সারাদেশে বলে বেড়াতো এতিমের টাকা নাকি খালেদা জিয়া আত্মসাৎ করেছেন।
দুদকের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, এরকম পরিস্থিতিতে আপনারা কাজ করতে পারেন নাই। এমন এক্সকিউজ দিতে পারেন। তার মধ্যেও কেউ কেউ কাজ করার চেষ্টা করেছেন। এখন সেই পরিবেশ নাই। এখন কোনো উপদেষ্টার তরফ থেকে কেউ ফোন করেছে কোনদিন? কেউ আপনাদের কোনো রকম হস্তক্ষেপ করছে না। আপনারা প্রমাণ করেন যে, ভালো পরিবেশ পেলে আপনারা ভালো কাজ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবিদদের অবশ্যই আমরা দোষ দেবো, সবাইকে দোষ দেবো। কিন্তু এই দোষ দিয়ে নিজের অন্যায় থেকে নিজে যেন পার পাওয়ার চেষ্টা না করি। নিজেকে জিজ্ঞেস করেন আমরা কী সৎ আছি। সব সময় কী বলপ্রয়োগের কারণে আমরা অসৎ হই। সব সময় কী আদেশ, নির্দেশের কারণে আমরা সৎ লোকের বিরুদ্ধে লাগি, বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলেও জানান এই উপদেষ্টা। বিগত কমিশন প্রায় শতাধিক মন্ত্রী, এমপির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দিয়ে গেছে। সেই অনুসন্ধানের বর্তমান অবস্থা কী সেটা জানানোর জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানান তিনি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি