বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি কাম্য নয়: হাইকোর্ট
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে রাশ টানতে চলমান ‘লকডাউনে’ ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে মুভমেন্ট পাস ও পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া নিয়ে এক চিকিৎসকের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বিতণ্ডার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি বিবৃতি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, “প্রজাতন্ত্রের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তাদের পেশাগত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। দেশের প্রতিটি নাগরিক করোনা মহামারিতে পর্যুদস্ত। যে কারণেই হোক, একটি ঘটনা (চিকিৎসকের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বিতণ্ডা) ঘটে গেছে। কিছু পেশাজীবী সংগঠন এ ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে এবং এর পাল্টা বিবৃতিও দেয়া হয়েছে। এটি কাম্য নয়।”
মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ বাগবিতণ্ডার ঘটনাটি নিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিবৃতি আদালতের নজরে আনলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
ইউনুস আলী আকন্দ এ ঘটনায় তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছেন। সোমবারও তিনি আদালতের স্বপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) আদেশ চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
আদালত তার মৌখিক আবেদন বাতিল করে বলেন, “ওই ঘটনায় আইনজীবী সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নন। তাই তিনি এ ব্যাপারে আদেশ চাইতে পারেন না।”
আদালত আরও বলেন, “সংক্ষুব্ধ কেউ আমাদের কাছে আদেশ চাইলে আমরা ব্যাপারটি দেখব।”
অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন আদালতকে বলেন, “চিকিৎসকের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বিতণ্ডার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।”
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ) সোমবার পৃথক বিবৃতি দেয়।
বিএমএ’র সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. এহতেশামুল হক চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের হাতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, যা হতাশাজনক। এ ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দাবি করা হয় বিবৃতিতে।”
স্বাচিপ বিএসএমএমইউ ইউনিটের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবু নাসের রিজভী এবং এর সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম জোয়ার্দার টিটো স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে দায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএসএ) সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জায়েদুল আলম তাদের বিবৃতিতে বলেছেন, “একজন চিকিৎসকের অপেশাদার এবং অশোভন আচরণ প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে ব্যথিত করেছে।”
বিবৃতিতে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানানো হয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ