প্রথম দফায় ৩৩ জিম্মির বিনিময়ে ১৯৭৭ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল

অবশেষে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। ফলে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১ হাজার ৯৭৭ জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি)  সংবাদমাধ্যম আল জাজিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। 

এদিন ভোরে ইসরায়েলের বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় আলাদা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'ইসরায়েলের সরকার জিম্মি ফেরত পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে। আগামীকাল রবিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে এই পরিকল্পনা। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রবিবার দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ৯৫ জনের নামও প্রকাশ করেছে বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়।'

যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি ৩পর্বে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম পর্বে যে ৩৩ জনকে মুক্তি দেবে হামাস, তাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। অন্যদিকে, যে ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেবে, তাদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি আছেন ২৯০ জন এবং অন্যান্য অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন ১ হাজার ৬৮৭ জন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

চুক্তির শর্ত মতে, আগামী ৬ সপ্তাহে সাত দফায় মুক্তি দেওয়া হবে এ ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি এবং ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে।

উল্লেখ্য, হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে বর্তমানে ৬০ জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা ইসরায়েলের। অন্যদিকে অ্যাডভোকেসি সংস্থা প্যালেস্টাইনিয়ান কমিশন অব ডিটেইনি’জ অ্যাফেয়ার্সের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি আছেন প্রায় ১০ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাগারে দণ্ডিত অন্তত ৬০০ জন।

প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। সেই হামলায় নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন সামরিক ও বেসামরিক ইসরায়েলি। এর পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।

প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকে গাজায় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ৬৪২ জনের বেশি। এ সংঘাতের  ফলে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার ১৯ লাখই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা এ উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।