News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:০৯, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

এবার টিউলিপের বিকল্প সন্ধানে যুক্তরাজ্য সরকার

এবার টিউলিপের বিকল্প সন্ধানে যুক্তরাজ্য সরকার

ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনে শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়া ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে ব্যাপক চাপে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির আর্থিক সেবাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। এরই মধ্যে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্তও হয়েছে।

এবার মন্ত্রী টিউলিপের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে দলটি। 

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এমন তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছেন, যেখানে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করলে তার স্থলাভিষিক্ত কে হতে পারেন।

সূত্র বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট নিয়ে ওঠা অভিযোগ ও শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসার পরই এই আলোচনা শুরু হয়।

দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের বিষয়টি জোরালো হচ্ছে। টিউলিপ যদি পদত্যাগে বাধ্য হন তাহলে নতুন কাউকে স্থলাভিষিক্ত করার চিন্তা করছে তার দল লেবার পার্টি।

দ্য সানডে টাইমস দাবি করেছে, ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাথে সম্পর্কের জেরে টিউলিপ পদত্যাগে বাধ্য হলে সে ক্ষেত্রে কাকে তার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে সেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম পর্যালোচনা করছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের জ্যেষ্ঠ সহযোগীরা।

আর এ জন্য সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থীর নাম বিবেচনায় রেখেছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট। 

শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। মন্ত্রী হিসেবে দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বও তার কাঁধে। 

শেখ হাসিনা গত আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। অভিযোগ উঠেছে, শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সম্পত্তি টিউলিপ ব্যবহার করছেন। 

টিউলিপের পদে কারা আসতে পারেন, সেই প্রশ্ন উঠতেই দেশটির অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভসের দুই সহযোগী অ্যালিস্টার স্ট্র্যাথার্ন ও ইমোজেন ওয়াকারের নাম সামনে এসেছে। গত সপ্তাহের শেষের দিকে টিউলিপের সম্ভাব্য বিকল্প কয়েকজনের নাম ব্রিটিশ সরকার বাছাই করেছে বলে জানা গেছে। 

১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বিবেচনায় আরও যারা আছেন তারা হলেন— প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রীর পার্লামেন্টারি প্রাইভেট সেক্রেটারি (পিপিএস) ক্যালাম অ্যান্ডারসন, পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রীর পিপিএস কনিষ্ক নারায়ণ, বিচারবিষয়ক মন্ত্রীর পিপিএস জশ সিমন্স ও রাচেল ব্লেক।

বিবেচনায় আসতে পারেন যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি ও অর্থনীতিবিদ টরস্টেন বেল। বেল একজন মন্ত্রীর সহকারীও। তারা দুজনই শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।

অন্যদিকে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল টিউলিপের পদে বিকল্প ব্যক্তিদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা ‘পুরোপুরি অসত্য’।

তবে ডাউনিং স্ট্রিটের সূত্র দ্য সানডে টাইমসকে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও কে টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন, তা বিবেচনা করছেন। 

সার্বিক প্রেক্ষাপটের সাথে বর্তমান পরিস্থিতি— সব মিলিয়ে টিউলিপের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ও দলে (লেবার পার্টি) তার অবস্থান সম্পর্কেও তৈরি করেছে নতুন জল্পনা-কল্পনা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) টিউলিপ ও তার পরিবারের সাত সদস্যের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সঙ্গে হওয়া চুক্তির মাধ্যমে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করতে টিউলিপ সহায়তা করেছিলেন কি না সে নিয়েও অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়