টিউলিপকে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ী
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির রাজনীতিতেও জড়িত টিউলিপ।
এ টিউলিপ সিদ্দিককে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ী। টিউলিপের খালা, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর যোগাযোগ ছিল।
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথির বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনামূল্যে পাওয়া ওই ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি তাকে দেয়া হয়। এর আগে গত ২০০১ সালে সেটি ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বর্তমানে পাউন্ডের বিপরীতে টাকার দর অনুযায়ী যা প্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দিয়ে কেনা হয়। ফ্ল্যাটটির বর্তমান দাম নথিতে উল্লেখ করা হয়নি। তবে একই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাট গত আগস্টে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (প্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা) বিক্রি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানাশোনা আছে এমন একজন ব্যক্তির বক্তব্য নিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। ওই ব্যক্তি গণমাধ্যমটিকে জানান, আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের দুর্দিনে তাকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের মা-বাবা। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নিজের মালিকানায় থাকা ‘একটি সম্পদ’ টিউলিপকে দিয়েছিলেন তিনি।
বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন আবদুল মোতালিফ। ভোটার নিবন্ধন সংশ্লিষ্ট নথি থেকে জানা গেছে, ওই এলাকায় মোতালিফের ঠিকানায় মজিবুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বসবাস করেন। মজিবুলের বাবা ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
আবদুল মোতালিফ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের কাছে কিংস ক্রসের ওই ফ্ল্যাট ক্রয় করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পরে সেটি নিয়ে কী করেছেন, তা আড়াল করতে গিয়ে এ বিষয়ে কোনো কিছুই বলতে চাননি তিনি।
তবে টিউলিপের ওই ফ্ল্যাট পাওয়ার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতার খবর ‘ভুল’ বলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের কাছে দাবি করেন তার (টিউলিপ সিদ্দিক) একজন মুখপাত্র।
এর আগে বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাৎ করেন বলে এমন অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনা ওই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি