ফিলিস্তিনে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ
ফিলিস্তিনে বিক্ষোভে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। ছবি: আল জাজিরা
কাতার ভিত্তিক সংবাদসংস্থা আল জাজিরার সম্প্রচার নিজেদের ভূখণ্ডে বন্ধ করে দিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ‘উত্তেজনা সৃষ্টিকারী’ বিষয়স্তু নিয়ে অনুষ্ঠান পরিবেশনের অভিযোগ তুলে এমন সিদ্ধান্ত নিল তারা। তবে এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পশ্চিম তীরে তাদের কাজ এবং কভারেজ স্থগিত করার সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। এটি এই সিদ্ধান্তকে অধিকৃত অঞ্চলে সংঘটিত দ্রুত ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলি কভার করা থেকে চ্যানেলটিকে নিরুৎসাহিত করার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছে সংবাদ সংস্থাটি।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলছে, কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলটির সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলনের সম্পর্ক বেশ কিছুদিন ধরে ভালো যাচ্ছিল না। চ্যানেলটির এক প্রতিবেদনে জেনিনে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মিলিশিয়াদের সংঘর্ষের খবর প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই সম্পর্কের এই টানাপোড়েন শুরু হয়।
ওয়াফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের সংস্কৃতি, স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিশেষায়িত মন্ত্রিসভা কমিটি এক বৈঠকে আল জাজিরা স্যাটেলাইট চ্যানেলের সম্প্রচারসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এর অফিসের সব ধরনের তৎপরতা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রচলিত আইন ও বিধি লঙ্ঘনের দায়ে চ্যানেলটির সব সাংবাদিক, কর্মচারী ও ক্রুদের সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধের বিষয়গুলো এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়বে।
ওয়াফা থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অপতথ্য, উত্তেজনা সৃষ্টিকারী, দেশবিরোধী ও হস্তক্ষেপমূলক প্রতিবেদন প্রকাশের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আল জাজিরার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আল জাজিরার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পর এএফপি নিশ্চিত করেছে যে, গণমাধ্যমটির রামাল্লাহ অফিস গত বুধবার (১ জানুয়ারি) সম্প্রচার বন্ধের একটি নির্দেশ পেয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস অবশ্য এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, এই সিদ্ধান্ত সম্প্রতি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেওয়া স্বেচ্ছাচারী তৎপরতার অংশ যা জনসাধারণের অধিকার ও স্বাধীনতাকে খর্ব করছে। এটি ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর নিরাপত্তার বাঁধনকে আরও জোড়াল করছে।
এ বিষয়ে হামাস আরও বলে, ‘আমরা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। দখলদারত্বকে তুলে ধরতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিশ্চিত করা খুবই জটিল এবং বিশেষ করে তা আমাদের জনগণের প্রতি সমর্থনকে তুলে ধরতে।’
গাজা উপত্যকায় হামাসের মিত্র ও সক্রিয় সংগঠন ইসলামি জিহাদও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি