দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৭
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা এটি।
অগ্নিবিধ্বস্ত বিমানটি থেকে এ পর্যন্ত মাত্র দুজনকে উদ্ধার করতে পেরেছে উদ্ধারকর্মীরা। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়।
দেশটির সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে একটি দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলেএতে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার সময় বিমানটিতে ১৮১ জন আরোহী ছিল।
রাজধানী সিউল থেকে প্রায় ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত মুয়ান শহরের বিমানবন্দরে ১৮১ জন আরোহী নিয়ে অবতরণ করছিল জেজু এয়ারের ওই ফ্লাইটটি। এ সময় রানওয়ে থেকে পিছলে ছিটকে গিয়ে কংক্রিটের দেওয়ালে ধাক্কা মারলে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
দেশটির ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, জেজু এয়ারের বিমানটি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ফিরছিল। এতে ১৭৫ জন যাত্রী এবং ৬ জন ছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সংস্থাটি আরও জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩২টি ফায়ার ট্রাক ও বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
মুয়ান অগ্নিনির্বাপন সংস্থা প্রধান লি জিয়ং-হিয়ন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ব্রিফিংয়ে বলেন, উদ্ধারকর্মীরা হতাহতদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে। অগ্নিকাণ্ডে বিমানটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে কেবল বিমানের লেজের অংশটি শনাক্তযোগ্য ছিল।
লি বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটি, বিমানটি পাখির দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে কিনা- দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সরকারি তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
একজন বিমানবন্দর কর্মকর্তা জানান, বিমানের লেজের অংশে আটকে থাকা যাত্রীদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ইয়োনহাপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানের যাত্রীদের মধ্যে ১৭৩ জন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক এবং দুজন থাইল্যান্ডের নাগরিক ছিলেন।
দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিমানের সিস্টেমে পাখি আটকে গিয়ে এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে দেয়ালে আছড়ে পড়ছে। অন্য একটি ভিডিওতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ফায়ার এজেন্সি জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলে ৮০ জন দমকলকর্মী এবং ৩০টির বেশি দমকল গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান চলাচলের ইতিহাসে এটি অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে গুয়ামে কোরিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২২৮ আরোহী নিহত হওয়ার পর ২০২৪ সালের শেষ মুহূর্তে এমন বিমান দুর্ঘটনা দেখল দেশটি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি/এনডি