এবার আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেন জার্মান চ্যান্সেলর
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ছবি: সংগৃহীত
আস্থা ভোটে হেরে গেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ফলে তাকে সংসদ ভেঙে দেয়ার অনুরোধ জানাতে হবে রাষ্ট্রপতিকে।
সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এ ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি আগাম নির্বাচনের পথ সুগম হয়েছে।
ওলাফ শলৎসের ওপর দেশটির বেশিরভাগ সংসদ সদস্য অনাস্থা জ্ঞাপন করায় বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইউরোপের বড় অর্থনীতির দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শলৎসের দল তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য এখন আগাম নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে থাকবে।
বুন্দেসট্যাগে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে ভোটে ৭১৭ জন সংসদ সদস্য তাদের মতামত প্রদান করেন। এরমধ্যে ৬৬ বছর বয়সী বর্তমান চ্যান্সেলরের পক্ষে ২০৭ জন আইনপ্রণেতা ভোট দিলেও বিপক্ষে ভোট দেন ৩৯৪ জন। এ ছাড়া ভোটদানে বিরত ছিলেন ১১৬ জন।
ভোটে পরাজিত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক–ভাল্টার স্টেইনমায়ার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আগাম নির্বাচন আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন।
দেশের অর্থনীতি ও বাজেট সংক্রান্ত বিষয়ে বিতর্কের জেরে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করার পর গত ৬ নভেম্বর চ্যান্সেলর শলৎজের নেতৃত্বাধীন তিন দলের জোট সরকার ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। ওই সময় উদারপন্থি ফ্রি ডেমোক্র্যাটস দলের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে বহিষ্কার করেন তিনি।
বর্তমানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে জার্মানি। জ্বালানির উচ্চ মূল্য, চীনের সঙ্গে তীব্র অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে বার্লিন ভূরাজনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসার সম্ভাবনা ন্যাটোর ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা তৈরি করেছে।
আস্থা ভোটের আগে পার্লামেন্টে উত্তপ্ত বিতর্কে অংশ নেন ওলাফ শলৎজ, বিরোধী ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রেডরিখ মের্জসহ অন্যান্য দলের নেতারা।
নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে শলৎজ বলেন, জার্মানির সংকট মোকাবিলায় নিরাপত্তা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক খাতে বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তার সরকারের।
তবে বিরোধী নেতা মের্জ প্রশ্ন করেন, এসব পদক্ষেপ কেন আগেই নেওয়া হয়নি।
জবাবে শলৎজ দাবি করেন, আগের সিডিইউ সরকার সামরিক বাহিনীকে দুর্বল অবস্থায় রেখে গিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, এখনই শক্তিশালী বিনিয়োগ ও পরিকল্পনা করার সময়। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার তৎপরতা আমাদের জন্য বিপদ সংকেত।
তবে চলমান পরিস্থিতিতে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত নিতে ২১দিন সময় পাবেন তিনি। এরইমধ্যে ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনায় সম্মতির ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি