মার্কিন আদালতে ঘুষ ও প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত গৌতম আদানি
গৌতম আদানি। ছবি: সংগৃহীত
ঘুষ ও প্রতারণার মামলায় ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ট ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। দেশটির সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ঘুষের প্রস্তাব ও তথ্য আড়াল করে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মার্কিন প্রসিকিউটরদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই প্রকল্পের বিনিময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে রাজি হয়েছিলেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি পেলে প্রতিষ্ঠানটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ করতে পারে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, লাভজনক সৌরশক্তি সরবরাহ চুক্তি সুরক্ষিত করার জন্য ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ২ হাজার ২৯ কোটি রুপি ঘুষ দিয়েছিলেন গৌতম আদানি ও তার সহযোগীরা। পরবর্তী সময়ে তারা বিনিয়োগকারীদের কাছে এ বিষয়ে মিথ্যা বলেছিলেন।
মার্কিন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রতারণার আশ্রয় নেয়ার কথা বলা হয়েছে মামলার অভিযোগে। ৬২ বছর বয়সী টাইকুনের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ও নথি দেখিয়ে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
উপসহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মিলার বলেন, আদানি মার্কিন বিনিয়োগকারীদের ব্যবহার করে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিশাল এ প্রকল্প গ্রহণ ও অর্থায়ন করতে চেয়েছিলেন।
দু’বছর আগে একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, এনার্জি প্রকল্পে সুবিধা পেতে ভারতের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে থাকতে পারে আদানি গোষ্ঠী। এ ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু করে মার্কিন গোয়েন্দারা।
জানা গেছে, গৌতম আদানি ছাড়াও সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন গৌতম আদানির স্বজন সাগর আদানি, আদানি গ্রিন এনার্জির সাবেক সিইও ভিনেত এস জেইন। এরইমধ্যে গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় আদানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠিত হলো। নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর সামাজিকমাধ্যমে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন গৌতম আদানি। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, তার প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়।
গৌতম আদানি ভারতের শাসক দল বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। আর এই ঘনিষ্ঠতা থেকে দুই পক্ষই লাভবান হচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে আসছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি