অবশেষে তোশাখানা মামলায় ইমরান খানের জামিন
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত
অবশেষে আলোচিত তোশাখানা মামলায় জামিন পেলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বিচারপতি মিঁয়াগুল হাসান আওরঙ্গজেব ২০ লাখ টাকার শিউরিটি বন্ডের বিনিময়ে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য ডন এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, পিটিআইয়ের চেয়ারম্যানের আইনজীবী দলের অন্যতম সদস্য সালমান সাফদার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। জামিন আদেশ হওয়ার পর ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আজ যদি আদেশের লিখিত কপি পাওয়া যায়, তাহলে তার পরিবারের সদস্য ও কর্মী-সমর্থকরা কর্তৃপক্ষের কাছে তার মুক্তির জন্য আবেদন জানাবেন।
আইএইচসির আজকের রায় ইমরান খান এবং তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের জন্য বড় অর্জন। কারণ এই আদালতে আর এমন কোনো মামলা অবশিষ্ট নেই, যা তার জামিনের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
তবে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, এখনই কারাগার থেকে মুক্তি মিলছে না ইমরান খানের। কারণ গত বছর ৯ থেকে ১২ মে পাকিস্তান জুড়ে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের দাঙ্গায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে যেসব মামলা চলছে পাকিস্তানের বিভিন্ন আদালতে, সেগুলোতে এখনও জামিন পাননি তিনি।
এর আগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে লাহোর হাইকোর্ট (এলএইচসি)।
ইমরান খানের বোন নুরীন নিয়াজি সম্প্রতি এই জামিন আবেদন করেছিলেন। যেখানে একাধিক মামলায় তার জামিন চাওয়া হয়েছিল।
আদালত ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে পাঞ্জাব ও ফেডারেল স্বরাষ্ট্র বিভাগের রিপোর্টগুলোও পর্যালোচনা করেছে। যেখানে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।
পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, প্রদেশটিতে পিটিআই প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে ইমরান খানের বিরুদ্ধে ৬২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা দুর্নীতি সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় ২০২১ সালে। পরে ২০২২ সালের আগস্টে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে এ ইস্যুতে লিখিত অভিযোগ জমা দেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসিন নওয়াজ রানঝা। অভিযোগে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার সময় বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান এবং সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোট ৫৮টি দামি উপহার পেয়েছিলেন ইমরান খান। এসব উপহারের সবগুলো তিনি তোশাখানায় জমা দেননি এবং যেসব উপহার জমা দিয়েছেন— সেগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে কিনেছেন এবং বাইরে বিক্রি করে দিয়েছেন।
বাইরে বিক্রি করা উপহারগুলোর মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে। এসব হাতঘড়ির আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপি। ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিও তোশাখানা মামলার আসামি ছিলেন। দু’মাস আগে এ মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। অবশ্য তার আগে ৯ মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে বুশরাকে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি